বাংলা প্রাপ্ত বয়স্কদের উপন্যাস । ১৮+ উপন্যাস

বাংলা সাহিত্যে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লেখা উপন্যাসের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। ১৮+ উপন্যাস গুলো সাধারণত সম্পর্ক, যৌনতা, আবেগ এবং সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলাপ – আলোচনা করে। আর এই উপন্যাস গুলো সমাজের অন্ধকার দিকগুলো, মানুষের আবেগ নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

প্রাপ্তবয়স্ক উপন্যাসগুলি পাঠককে মানবিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। আবার অনেক সময় এটি জিবনের নিষিদ্ধ ও অস্বস্তিকর দিক গুলো প্রকাশ করে। যা একজন পাঠকের সামাজিক বা ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সাহায্য করে।

১৮+ উপন্যাস

প্রাপ্ত বয়স্ক উপন্যাস গুলো মানুষের চরিত্র ব্যাক্তিগত দ্বন্দ্ব, অপ্রকাশিত আবেগ ও জটিল সম্পর্কের  বিষয় গুলো তুলে ধরে। ১৮+ উপন্যাস এর মাধ্যমে প্রেম, বন্ধুত্ত্ব, পারিবারিক সম্পর্ক, এবং যৌনতার মতো বিষয় গুলো খুব সহজে বুঝা যায়। এছাড়া ও বহুমুখিতা, সত্য-মিথ্যা, বিশ্বাস ও বিশ্বাসঘাতকতার অঙ্গীকার সম্পর্কের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। এই বই গুলো অধ্যায়নের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরের সমস্যা সমাধান পাওয়া যায়। কিছু কিছু বইয়ে নারীর স্বাধীনতা, তাদের আত্মবিশ্বাস এবং সমাজের নানা ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তুলে ধরা হয়েছে।

নাইট গেম

নাইট গেম

নাইট গেম বইটির লেখক আনিছুর রহমান। এই বইটি উত্তেজক এবং সাহসী উপন্যাস। যা নিষিদ্ধ বিষয়গুলিকে স্পর্শ করে। যেমন অন্তরঙ্গ সম্পর্ক, অভ্যন্তরীণ অশান্তি এবং অন্ধকার মানব আচরণ কে উত্তেজক করে তোলে। প্রাপ্ত বয়স্ক জন্য বইটি খুব রোমান্টিক। এছাড়াও এই বইয়ে আধুনিক শহুরে জীবনের গভীর ও অন্ধকার দিকগুলোকে তুলে ধরা হয়েছে। এই বইটি মূলত রহস্য, রোমাঞ্চ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযোগী বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা হয়েছে। যেটি প্রায় সকল প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে এসেছে। এই গল্পের মূল চরিত্ররা নানা রকমের জটিল সম্পর্ক, আবেগ, এবং লোভের জালে জড়িয়ে পড়ে। ফলে এটির কারণে তাদের জীবনে একটি বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

গল্পে আরও দেখা যায়, মূল চরিত্ররা একসময় নিজেদের ভেতরের দুর্বলতাগুলো নিয়ে সংগ্রাম করতে করতে এক অবৈধ ও অনৈতিক জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। বলে রাখা ভালো, তাদের এই জগতে অর্থ, ক্ষমতা, এবং যৌনতার খেলা কেন্দ্রীয় ভূমিকায় থাকে। লেখক এই বইয়ে সমাজের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের গোপন জীবন এবং তাদের পেছনের কূটকৌশলগুলোকে গল্পে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। যেটি বাস্তবতাকে আমাদের মাঝে তুলে ধরে। এই কাহিনীতে লেখক আনিছুর রহমান একটি দুঃসাহসিক প্রেম, প্রতারণা, এবং ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প আমাদের তুলে ধরেছেন। যেখানে আবেগের গভীরতা ও মানব চরিত্রের অন্ধকার দিকগুলোর প্রকাশ ঘটে।

গর্ভধারিণী

গর্ভধারিণী

গর্ভধারিণী উপন্যাসের লেখক হচ্ছে সমরেশ মজুমদার। উপন্যাসটি একজন মহিলার জীবনকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে। যে মা হওয়ার শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণার সাথে লড়াই করছেন। মানসিক অশান্তি এবং তার উপর চাপের চিত্রের মাধ্যমে, গৌরধারীণী পাঠকদের লিঙ্গ ভূমিকা, ব্যক্তিগত পরিচয়, এবং আত্ম-উপলব্ধির বিষয় গুলির সাথে জড়িত করা হয়েছে। সেইসাথে এই গল্পে সম্পর্কের জটিলতা, মানব জীবনের আবেগ, এবং সামাজিক কাঠামোর বিষয়কে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যেটি সকল মানুষের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।

এই কাহিনীর মূল চরিত্র একজন শিক্ষিত এবং স্বাধীনচেতা নারী। যিনি নিজের স্বপ্ন ও চেতনা নিয়ে বাঁচতে চান। বলে রাখা ভালো, এই গল্পে লেখকের কাল্পনিক চরিত্র পাঠকদের কাছে ব্যপক পরিচিতি লাভ করেছে। সেইসাথে তিনি এই গল্পের মূল থিম হিসেবে মাতৃত্ব এবং নারীর স্বাধীনতার কথা তুলে ধরেছেন। কাহিনীতে চন্দ্রা নামক একটি মেয়ের জীবন কাহিনী ফুটে উঠেছে। চন্দ্রা তার স্বপ্ন ও চেতনাকে বাস্তবায়িত করতে চায় কিন্তু সমাজ তাকে দমিয়ে রাখে। এর কারণ সমাজের রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি, পারিবারিক চাপ, এবং সম্পর্কের টানাপোড়া ইত্যাদি। চন্দ্রার জীবনে একসময় আসে প্রেম, বিয়ে, এবং মাতৃত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এবং এটির মাধ্যমে সে তার চিন্তাধারা এবং জীবনের লক্ষ্যকে নানা দিক থেকে প্রভাবিত করে।

চন্দ্রা একসময় গর্ভবতী হয়, কিন্তু সেই মাতৃত্ব তাকে আত্মপরিচয়ের গভীর প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায়। সমাজের কারণে সে একময় ভাবতে থাকে, গর্ভধারণ শুধু কি সামাজিক দায়িত্ব? নাকি এটি নারীর জীবনের সবচেয়ে বড় পরিচয়। পরবর্তীতে আমরা দেখতে পারি, চন্দ্রা নিজের ইচ্ছা, ভালোবাসা, এবং সামাজিক দায়িত্বের মধ্যে টানাপোড়েনে পড়ে। যেটি গল্পে ফুটে তোলা হয়েছে। সমরেশ মজুমদারের এই উপন্যসের মাধ্যমে সামাজিক বাস্তবতা, সম্পর্কের টানাপোড়া যৌনতা, প্রেম ইত্যাদি জাতীয় বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এবং সমাজে নারীর অবস্থানকে বিশেষ ভাবে ফুটে তোলা হয়েছে।

মাধুকরী

মাধুকরী

মাধুকরী উপন্যাসের লেখক হচ্ছে বুদ্ধদেব গুহ। যা ১৯৬৮ সালে আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড প্রকাশিত হয়। মাধুকরী শব্দটি স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ। মধুকর বা মৌমাছি এর পুরুষ লিঙ্গ। ফুলে ফুলে ঘুরে মৌমাছি যেমন মধু সংগ্রহ করেন ঠিক তেমনি আমাদের সমাজে কিছু মানুষ রয়েছে যারা বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে প্রেম ভিক্ষা ও মধুকরের মত বৃত্তির চেষ্টা চালায়। যে পরিবারে স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের প্রতি অনুগত বা বিশ্বস্ত নাই সেখানে প্রবেশ করে ভালবাসার সংগ্রহের চেষ্টা চালায়।

এই উপন্যাসের লেখক বুঝাতে চেয়েছে যে প্রেম-ভালবাসার জন্য কিভাবে স্বামী / স্ত্রী একে অন্যকে ছেড়ে নানা জনের সাথে বিভিন্ন জায়গায় মধুকরের মত ঘুরে ঘুরে প্রেম-ভালবাসার চেষ্টা চালায়। এবং যার শেষ পরিনতি হয় অসামাজিক কাজের মাধ্যমে। এই গল্পে একজন নারী ও পুরুষের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এবং এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র একজন পুরুষ ও নারী। বইয়ের কাহিনীতে আমরা দেখতে পারি, একজন পুরুষ প্রকৃতিপ্রেমী এবং সমাজবিরাগী মানুষ। সে অনেক জীবন যুদ্ধের পরে তার সভ্যতার শৃঙ্খল ও কৃত্রিমতায় অতিষ্ঠ হয়ে প্রকৃতির মাঝে আশ্রয় নেন। মূলত এখান থেকেই এই গল্পের কাহিনী শুরু। পরবর্তীতে আমরা দেখতে পারি, সেই যুবকের জীবনের এক পর্যায়ে সে বেছে নেয় এক নিঃসঙ্গ জীবন।

যেখানে নেই সামাজিক দায়বদ্ধতা বা সম্পর্কের শৃঙ্খলতা। সে ভাবতো জীবন মানে স্বাধীনতা, প্রকৃতি ও নিস্তব্ধতা। তার জীবনযাপনের এক পর্যায়ে একটি মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয়। মূলত এই নারী তার প্রেমিকা বা সঙ্গী নয়। বরং এটি একটি এক জটিল চরিত্র। যে চরিত্রে সমাজ ও প্রকৃতির দ্বন্দ্ব প্রবলভাবে কাজ করে এবং এই গল্পটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। এই গল্পে লেখক বাস্তবতার নানা বিষয়কে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এবং এই উপন্যাসে লেখক মূল থিম হিসেবে দেখিয়েছেন কীভাবে একজন মানুষ স্বাধীনতা এবং সত্যিকারের জীবনের জন্য সমাজের কৃত্রিমতাকে অতিক্রম করতে চায় এবং পরবর্তীতে কিভাবে তারা নানা বিপদের সন্মুখিন হয়।

 

কামসূত্র

কামসূত্র

কামসূত্র প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ। যা রচিত করেন বাৎস্যায়ন। কাম শব্দের অর্থ ইন্দ্রিয়সুখ বা যৌন আনন্দ। অপরদিকে সূত্র শব্দের আক্ষরিক অর্থ সুতো বা যা একাধিক বস্তুকে সূত্রবদ্ধ রাখে। মূলত বইটি যৌনতা ও প্রেম সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গ্রন্থটি সাতটি বই এবং ৩৬টি অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। বইটিতে বিভিন্ন শারীরিক সম্পর্কের কৌশল এবং অঙ্গভঙ্গি বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়াও পারস্পরিক সম্মতির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। কামসূত্র বইটিতে একটি ভালো জীবন যাপন ও সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এই বইয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে প্রেমের উৎপত্তি কিভাবে করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

একজন নারী ও পুরুষের মধ্য কিভাবে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং প্রেমের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক তৃপ্তি লাভ করা যায়, তা এই বইয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও গল্পে আরও অনেক বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যেমন বিভিন্ন যৌন আসন এবং শারীরিক মিলনের পদ্ধতির ব্যাখ্যা, সঠিক সঙ্গী নির্বাচন ও প্রেমের চর্চা এবং সম্পর্কের উন্নতি করার উপায়, সফল বিবাহিত জীবনের জন্য দিকনির্দেশনা ইত্যাদি। এই গল্পে পাঠকদের আকর্ষণ করার জন্য নানা ধরনের আকর্ষণীয় দিক লেখক তুলে ধরেছেন। এবং কামসূত্র বইটি শুধু যৌন আসন বা শারীরিক সম্পর্কের নির্দেশিকা নয়। বরং এটি মানবজীবনের প্রেম, সম্পর্ক এবং যৌনতার উপর একটি পূর্ণাঙ্গ দর্শন হিসেবে লেখক আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছন।

চৌরঙ্গী

চৌরঙ্গী

চৌরঙ্গী উপন্যাস টি লেখেছেন শংকর। এই বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬২ সালে। চৌরঙ্গী উপন্যাসটি জনপ্রিয়তা পাওয়ার কারণে ভারতীয় পাশাপাশি বিদেশি বিভিন্ন ভাষায়ও তা অনূদিত হয়। কলকাতার মহানগরীর একটি বিখ্যাত হোটেল এবং তার আশেপাশের জীবনের গল্প নিয়ে রচিত হয় চৌরঙ্গী উপন্যাস। উপন্যাস টি একটি হোটেলের অতিথি ও কর্মীদের জীবনযাপনের দিকগুলি তুলে ধরা হয়েছে।

এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলি হল সুব্রত, মিস সিনহা, মার্কোস ও রোজি। এখানে যারা রয়েছে তাদের প্রত্যেকের জীবনের স্বপ্ন ও বাস্তবতার মধ্যকার টানাপোড়েনের মাধ্যমে সমাজের এক গভীর দৃষ্টান্ত তুলে ধরে হয়েছে। চৌরঙ্গী শুধু একটি গল্প নয়, এটি ২০ শতকের কলকাতার সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতিচ্ছবি। যেখানে ভালোবাসা, আকাঙ্ক্ষা, হতাশা এবং মানুষের মানবিক দিকগুলোর সঠিক তুলে ধরে।

মিলির যৌন জীবন

মিলির যৌন জীবন

মিলির যৌন জীবন বইটি লিখেছেন বকুল চৌধুরী। বইটিতে একজন তরুণী মেয়ের জীবন কাহিনী লেখা হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র হল মিলি। যিনি একজন অসহায় নির্যাতীতা তরুণীর। যার বয়স ১৬ বছর। একটু আশ্রয়ের আশায় মিলি এখানে ওখানে ঘুরে বেরিয়েছেন। অবশেষে আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে কিন্তু তার বিনিময়ে নির্মমভাবে ধর্ষিতা হয়েছে প্রতিটি স্থানে। মিলির ষোল বছরের যৌবনকে খুবলে খুবলে খেয়েছে নর পশুর দলেরা।

তার পর আপ্রাণ চেষ্টা করছে নিজের-সতীত্বকে রক্ষায়। মিলি অবশেষে আশ্রয়ের জন্য ধরা পড়ল দুর্ধর্ষ স্মাগলার মিহিরের হাতে জাল টাকা তৈরীর কারখানায়। অবাধ্যতার দরুণ মিহির নিক্ষেপ করলো মিলিকে এক হিংস্র জানোয়ার সিম্পাঞ্জীর কাছে। সাথী ললিতার তাজা কলিজা রেঁধে দিল মিহির মিলিকে খাবার জন্য। শ্বাস রুদ্ধকর অত্যাচার আর নির্মমতাৱ পৃথিবীতে ঘূরে আসার নামান্তরই এ বই পড়া।

লজ্জা

লজ্জা

লজ্জা বইটি তসলিমা নাসরিনের অন্যতম বিতর্কিত উপন্যাস। যা ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইটি হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও অবিচারকে কেন্দ্র করে রচিত হয়। ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরবর্তী ঘটনাবলির লেখা হয়েছে এই বইয়ে। বাংলাদেশে ঢাকায় দাঙ্গার প্রভাবে হিন্দু দত্ত পরিবার এলাকাবাসীর ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়।

তসলিমা নাসরিন সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি সংঘটিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেন। এবং হিন্দুদের পক্ষে অবস্থান নেন। এই বইটি একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এই  বইটি বাংলাদেশে ১৯৯৩ সালে নিষিদ্ধ করা হয়। লজ্জা উপন্যাস বইটি  প্রকাশের প্রথম ৬ মাসে প্রায় ৫০ হাজার কপি বিক্রয় হয়।

শঙ্খনীল কারাগার

শঙ্খনীল কারাগার

শঙ্খনীল কারাগার উপন্যাসটির লেখক হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদের। যা ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইটি মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবনের জটিলতা, আবেগ ও দৈনন্দিন জীবনের দ্বন্দ্বকে তুলে ধরা হয়েছে। এই উপন্যাস মূল বিষয় হচ্ছে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের জীবনের সংগ্রাম। শঙ্খনীল কারাগার নামটি প্রতীক ভাবে মানুষের অভ্যন্তরীণ কষ্ট ও জীবনের কঠিন ব্যাস্তবতার প্রতীক। যা চরিত্রদের ব্যক্তিগত আঘাত, স্বপ্ন এবং ব্যর্থতার মাধ্যমে উদ্ভাসিত হয়।

রাজনের রসিকতা

রাজনের রসিকতা

রাজনের রসিকতা বইটি লিখেছেন সায়ন্তনী পূততুন্ড। এই উপন্যাসটি হাস্যরসাত্মক গল্প ও সমাজের বিভিন্ন মানুষের আচরন সম্পর্ক কে সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র রাজন। যিনি একজন হাস্যরসিক, মজার এবং বুদ্ধিমান ব্যক্তি। তিনি জীবনে নানা ধরনের রসিকতা ও মজার পরিস্থিতিতে পড়েন। তবে এসব রসিকতার মধ্যে গভীর মানবিক ভাবনা এবং সমাজের নানা বাস্তবতাও প্রকাশ পায়।

রাজনের হাস্যরসের মধ্যে সাধারণ মানুষের জীবনের বাস্তবতা এবং আবেগের বিভিন্ন দিক উঠে আসে। এই উপন্যাসে রাজনের মাধ্যমে মানুষের মনস্তত্ত্ব এবং তাদের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, দ্বন্দ্ব ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রকাশ পায়। এই বইটি জীবনের কঠিন বাস্তবতাগুলোর মধ্যে হাস্যরসের উপাদান খুঁজে বের করে, এবং এটি পাঠকদের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।

মহাভারতে যৌনতা

মহাভারতে যৌনতা

মহাভারতে যৌনতা বইটি  লিখেছেন শামীম আহমেদ। লেখক এখানে মহাভারতের মতো একটি মহাকাব্যের বিভিন্ন দিক এবং বিশেষত যৌনতার প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ – আলোচনা করেছেন। ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে মহাভারতে যৌনতার ভূমিকা এবং এর প্রভাব বিশ্লেষণ করেছেন। বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ এবং সম্পর্কের মধ্যে যৌনতা কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

তা নিয়ে বইটি গভীর ভাবে লেখা হয়েছে। এই বইটিতে যৌনতা কে শুধু শরীরিক সম্পর্ক নয়; এটি ক্ষমতা, রাজনীতি, বংশরক্ষা এবং সমাজের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মানসিকতার অংশ হিসেবে ধরা হয়েছে। রাজনীতি এবং ক্ষমতার হাতিয়ার হিসেবে মহাভারতে যৌনতা কে ব্যবহৃত করা হয়েছে। এছাড়া ও ধর্মগ্রন্থের একটি অংশ হিসাবে যৌনতার উপস্থিতি কীভাবে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে, তা এখানে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

গুডনাইট

গুডনাইট

গুডনাইট  উপন্যাসটি একটি গভীর ও বাস্তবধর্মী কাহিনী যা লিখেছেন নিমাই ভট্টাচার্য। এই উপন্যাস আধুনিক জীবনের টানাপোড়েন, সম্পর্কের জটিলতা, ও মানুষের আবেগঘন দিকগুলো ফুটে উঠেছে। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল বসু। যার জীবনে একাধিক নারীর প্রবেশ ঘটে। তবে প্রতিটি সম্পর্ক তাকে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা দেয়।

তার কাছে এগুলো কেবল শারীরিক নয়; বরং আবেগিক এবং মানসিকও শান্তি দেয়। বসু একজন আধুনিক মানুষ, যার মন ও শরীরের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। গুডনাইট শুধুমাত্র একটি প্রেমের গল্প নয়; এটি আধুনিক জীবনের এক রুপ। যা নিমাই ভট্টাচার্য তাঁর উপন্যাসটিতে জটিল ভাবে তুলে ধরেছে।

অসভ্য চোখ

অসভ্য চোখ

অসভ্য চোখ উপন্যাসটি লিখেছেন সায়ন্তনী পূততুন্ড। উপন্যাসটি ২০১৫ সালে সহিত্যম প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বইটিতে বর্তমান সমাজের ভণ্ডামি, পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নারীর প্রতি কু-দৃষ্টির কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। আধুনিক সময়ের সামাজিক সমস্যাগুলোর ওপর ভিত্তি করে বইটি লেখা হয়েছে।

নারীর প্রতি অসভ্য চোখ কীভাবে তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও জীবনধারায় প্রভাব ফেলে তা নিয়ে আলাপ -আলোচনা করা হয়েছে। এবং নারীর তার অধিকার রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কি নিয়ম অনুযায়ী চলতে হবে তা লেখা হয়েছে। এ ছাড়া আত্মসম্মান বজায় রেখে নারীর এগিয়ে চলার বার্তা দেওয়া হয়েছে। অসভ্য চোখ উপন্যাসে লেখকের ভাষা তীক্ষ্ণ এবং সাহসী ছিল।

রাত ভ'রে বৃষ্টি

রাত ভ’রে বৃষ্টি

রাত ভ’রে বৃষ্টি বইটি লিখেছেন বুদ্ধদেব বসু। যা ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত হয় আজকাল প্রকাশনীতে। এই বইয়ে প্রেম, নিঃসঙ্গতা, প্রকৃতি, এবং জীবনের রহস্যময়তাকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে। প্রকৃতির সাথে মানব জীবনের গভীর সম্পর্ক, একাকিত্ব, প্রেম, এবং আবেগের উপলব্ধি হল এই গ্রন্থের মূল কথা।

কলকাতা শহরের মধ্যবিত্ত নারী-পুরুষের দাম্পত্য সম্পর্কের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম জটিলতা, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের সংশয়ী প্রকাশ যেমন ঘটেছে উপন্যাসটিতে। ঠিক তেমনই প্রচলিত যৌন-নৈতিকতা বা শারীরিক সম্পর্কের প্রথাগত মূল্যবোধের ওপর তীব্র আঘাতও টের পাওয়া যায় সেই বিষয়ে লেখা রয়েছে।

সচিত্র যৌনবিজ্ঞান

সচিত্র যৌনবিজ্ঞান

সচিত্র যৌনবিজ্ঞান বইটি লিখেছেন আবুল হাসানৎ। বইটি সেক্সোলজি, প্রেম, সম্পর্ক, স্বাস্থ্য, এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিশেষ আলোচনা করে। এছাড়া ও যৌনশিক্ষা, নিরাপদ যৌন সম্পর্ক, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং যৌনতা সম্পর্কিত ভুল ধারণাগুলির বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করে। সচিত্র যৌনবিজ্ঞান পড়ার মাধ্যমে যৌনতার নানাবিধ সমস্যা সঠিক সমাধান পাওয়া যায়। বইটি একটি সচেতনতা তৈরি করে। যা যৌনস্বাস্থ্য ও সম্পর্কের সংস্পর্শে নানা প্রশ্নের উত্তর দেয়।

অবগাহন

অবগাহন

অবগাহন বইটি লিখেছেন ঘনশ্যাম চৌধুরী। লেখক সমাজের প্রান্তিক মানুষের জীবনযাপন, তাদের যন্ত্রণাদায়ক বাস্তবতা, প্রেম, বিভেদ ও আত্মসন্ধানের গল্প গুলো তুলে ধরেছেন। যেখানে জীবনযাত্রার সংগ্রাম, সামাজিক বৈষম্য, এবং ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে মানুষের অন্তরাত্মার গল্প ফুটে ওঠেছে। অবগাহন মূলত একটি অন্তর্দৃষ্টি।

শেষ কথা

১৮+ উপন্যসের বই মূলত প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য লেখা হয়েছে। মূলত এই সকল বইয়ে প্রাপ্তবয়স্কদের উপযোগী বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত থাকে। এবং ১৮+ উপন্যাস বলতে সাধারণত সেইসব সাহিত্যকর্মকে বোঝানো হয় যেটি আমরা এই আর্টিকেলের ওপরে বিস্তারিত আলোচনা করে এসেছি। আমাদের এই আর্টিকেলটি কেমন লেগেছে তা কিন্তু অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। সেইসাথে এই সকল তথ্য নিয়মিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন, এবং বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন ধন্যবাদ।

About the Author: Taufik

হ্যালো বন্ধুরা, আমি তৌফিক বিডিইবুক সাইটের একজন কন্টেন্ট লেখক। আমি মূলত বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং বাংলা ভাষার বই নিয়ে লেখালিখি করে থাকি। বিডিইবুক সাইটে আমার লেখা পড়লে বাংলাদেশের ইতিহাস এবং বাংলা ভাষার বই সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমি সব সময় সঠিক তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করে থাকি যা আপনারা আমার লেখা পড়লেই বুজঝতে পারবেন।

You May Also Like

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।