অনেক সময় আমাদের জীবনে এমন পরিস্থিতি আসে যে আমরা হতাশ করে পরি। মনে হয় জীবনে বেঁচে থাকার আর কোন আশা নেই, আমাদের জীবনের চলার পথ হারিয়ে ফেলেছি। ঠিক সেই মুহুর্তে আমাদের দিশেহারা জীবনের মোর ঘুরে যেয় কিছু অনুপ্রেরণামূলক গল্পের বই। এসব অনুপ্রেরণামূলক গল্পের বইয়ের কারণে আমাদের জীবনের এক নতুন সূর্য উদিত হয়, যা আমাদের নতুন করে বাচার পথ দেখায়। আমাদের জীবকে নতুন করে সাজাতে সাহাস্য করে এবং আমাদের মনোবল বৃদ্ধি করে।
তাই আমাদের সকলের জীবনে কিছু অনুপ্রেরণামূলক গল্পের বই প্রয়োজন যা আমাদের নতুন জীবনের পথ দেখাবে, আমাদের সকল অনুকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সহায়তা করবে। আর এখানে আমি আজকে কিছু বিখ্যাত অনুপ্রেরণামূলক গল্পের বই নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি, যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে এবং আপনার হতাশা জীবনের সকল গ্লানি মুছে দিয়ে নতুন করে বাঁচতে সাহাস্য করবে।
অনুপ্রেরণামূলক গল্পের বই আমাদের জীবনে চলার পথে অনেক বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে। আপনার জীবনকে বদলে দিতে কেবল মাত্র একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্পের বই যথেষ্ট। অনুপ্রেরণামূলক গল্প আপনার হতাশা ভরা জীবনকে নিমিষেই নতুন করে সাজিয়ে দিতে পারে। মানুষের জীবনের সকল সফলতার পিছনে কিছু না কিছু অনুপ্রেরণামূলক গল্প থাকে যা থেকে সেই মানুষ কাজের গতি ফিরিয়ে পায় এবং জীবনে সফল হয়। তাই আজকে আমি কিছু বিখ্যাত অনুপ্রেরণামূলক গল্পের বই নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি যা আপনার জীবনকে পরিবর্তন করতে সাহাস্য করবে।
দ্য অ্যালকেমিস্ট একটি অসাধারণ অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস যা ১৯৮৮ সালে বিখ্যাত কবি পাওলো কোয়েলহো রচনা করেন। বিখ্যাত এই অনুপ্রেরণামূলক বইটি ২০২৩ সালে মাহমুদ উল আলম বাংলায় অনুবাদ করেন যা ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়। এই অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাসটি এক তরুণ রাখাল সান্তিয়াগোর স্বপ্ন অনুসরণের কাহিনীকে ঘিরে রচিত হয়েছে। স্পেনে বসবাসকৃত সান্তিয়াগো একদিন স্বপ্নে মিশরে লুকিয়ে থাকা গুপ্তধনের সন্ধান পায়। এই স্বপ্ন তাকে এক দীর্ঘ এবং রহস্যময় অভিযানের মুখমুখি করে দেয়। এই স্বপ্নের ফলে তিনি অভিযানের সময় নানা বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়, বিভিন্ন সময় অনেক নতুন মানুষদের সাথে পরিচিত হয় এবং তার নিজের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য খুঁজে পায়।
দ্য অ্যালকেমিস্ট উপন্যাস আমাদের শেখায় প্রত্যেক মানুষের মধ্যে একটি নিজস্ব সত্যা বা জীবনের লক্ষ্য লুকিয়ে থাকে যা অনুসরণ করলে আমরা সেই প্রকৃত সাফল্য অর্জন করতে পারব। মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে অনেক ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস এবং কঠোর পরিশ্রম করা অত্যন্ত জরুরী। এই উপন্যাস থেকে আমাদের ভাগ্য, স্বপ্ন এবং জীবনের ইচ্ছে আকাঙ্খা পূরণের সাহস ও অনুপ্রেরণা জোগায়। এই উপন্যাস আমাদের শেখায় যদি তুমি সত্যি অর্থে কোন কিছু চাও তবে পুরো বিশ্ব তা বাত্যবায়নের জন্য তোমাকে সাহায্য করবে। একটি স্বপ্নকে কিভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে তা এই অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস থেকে আমরা খুব সহজে উপলব্ধি করতে পারি।
ম্যানস সার্চ ফর মিনিং একটি অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপর যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল তা থেকে বেঁচে থাকা একজন ব্যক্তি ভিক্টর ফ্রাঙ্কলের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর রচিত হয়েছে। তিনি একজন মনোবিজ্ঞানী ছিলেন যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এক বন্দি জীবন পার করেছেন। এই উপন্যাসে তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানুষকে তার জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে হয় এবং টিকে থাকতে হয়। ফ্রাঙ্কল এই উপন্যাসে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন জীবন কঠিন হলেও এর অর্থ কোন দিন হারায় না।
ম্যানস সার্চ ফর মিনিং উপন্যাসে শেখানো হয় দুঃখ-কষ্ট মানুষের জীবনেরই একটা অংশ, আমরা যদি মানসিকভাবে শক্ত থাকতে পারি তবে সকল বাধা অতিক্রম করে সফলতা আসবে। এটি শুধু মাত্র একটি আত্মজীবনী নয়, বরং এটি একটি মহামূল্যবান অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস যা একটি হতাসা গ্রস্থ জীবঙ্কে নতুন ভাবে বাঁচতে শেখায়। যারা জীবনে হতাসা গ্রস্থ থাকেন, জীবনের মানে খুঁজে পান না তাদের জন্য এই উপন্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সকলের জীবনেই এমন একটি অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস প্রয়োজন যা আমাদের নতুন করে সব কিছু ভাবতে শেখাবে এবং নতুন করে জীবন গড়তে সাহায্য করবে।
দ্য পাওয়ার অফ নাও এমন একটি বই যা বর্তমান মুহূর্তের গুরুত্ব বোঝাতে লেখা হয়েছে। এটি একার্ট টোলে নামে এক জার্মান আধ্যাত্মিক শিক্ষক ১৯৯৭ সালে রচনা করেন। এই উপন্যাসে আমাদের বর্তমান মূহুর্ত কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা অনেক সুন্দর ভাবে বুঝানো হয়েছে। এই উপন্যাসে বুঝানো হয়েছে কিভাবে আমরা অতীতের দুঃখ এবং ভবিষ্যতের চিন্তায় মগ্ন থেকে আমাদের সুন্দর বর্তমান কে উপভোগ করতে পারি না। লেখক অনেক সুন্দর ভাবে দেখিয়েছেন আমাদের জীবনে সুখ ও শান্তি পেতে হলে বর্তমান সময়ের উপর মনোযোগ দিতে হবে।
তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, অতীত বদলানো যায় না এবং ভবিষ্যৎ অজানা কিন্তু বর্তমানের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তাই আমাদের অতীতের দুঃখ কষ্ট এবং ভবিষ্যৎ অজানা আশা না করে বর্তমানকে সুন্দর ভাবে উপভোগ করতে হবে। তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ থেকে মুক্তি পেতে হয় এবং বর্তমান কে গ্রহণ করে কীভাবে জীবনে শান্তি লাভ করা সম্ভব। এই উপন্যাস আমাদের শেখায় সুখ কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর নির্ভর করে না, সুখ কেবল মাত্র আমাদের চিন্তার উপর নির্ভরশীল। যারা সব সময় অতিরিক্ত চিন্তায় ভোগেন এবং জীবনে মানসিক শান্তি খুঁজে বেরান তাদের জন্য এটি একটি অসাধারণ উপন্যাস। এই বইটি আপনার জীবনে অনুপ্রেরণা যোগাবে, আপনাকে শেখাবে কীভাবে বর্তমানকে কাজে লাগিয়ে মানসিক শান্তি সুখ পাওয়া যায় এবং জীবঙ্কে নতুন ভাবে সাজানো যায়।
রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড এমন একটি উপন্যাস যা আর্থিক শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। এখানে দেখানো হয়েছে কিভাবে আপনে নিজের অর্থ ব্যয় করবেন, আপনার অর্থ কিভাবে কাজে লাগাবেন এবং সঠিক ভাবে বিনিয়োগ ও অর্থ ব্যবস্থাপনা করবেন। বইটিতে লেখক রবার্ট কিয়োসাকি দুইটি ভিন্ন চিন্তাধারাকে তুলে ধরেছেন, একটি হচ্ছে তার নিজের বাবার (পুওর ড্যাড) এবং অন্যটি তার বন্ধুর বাবার (রিচ ড্যাড)। এখানে পুওর ড্যাড বিশ্বাস করেন ভালো পড়াশোনার মাধ্যমে ভালো চাকরি পাওয়াকেই সাফল্যের চাবিকাঠি বলে। অন্যদিকে রিচ ড্যাড মনে করেন, সত্যিকারের আর্থিক আর্থিক স্বাধীনতা আসে বিনিয়োগ ও সঠিকভাবে অর্থ ব্যবস্থাপনা মাধ্যমে।
রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড বইটিতে লেখক রবার্ট কিয়োসাকি খুব সুন্দর ভাবে দেখিয়েছেন ধনী এবং দরিদ্র-মধ্যবিত্তদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা দৃষ্টিভঙ্গি। ধনী ব্যক্তিরা তাদের টাকা কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগের মাধ্যমে ধন-সম্পদ বেশি করে। অপরদিকে, দরিদ্র ও মধ্যবিত্তরা শুধু মাত্র তাদের চাকরির উপর নির্ভর করে থাকে। এই বই থেকে আমরা শিখতে পারি কিভাবে অর্থ ব্যয় এবং বিনিয়োগ করতে পারি, কীভাবে ঋণ ব্যবস্থাপনা করতে হয় এবং কীভাবে আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন করা যায়। এটি এমন একটি বই যা আপনার হতাশা গ্রস্থ জীবনে সাফল্যের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। এটি ব্যবসায় ও বিনিয়োগ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে এবং পাঠকদের অনুপ্রাণিত করে কিভাবে তারা নিজের আর্থিক ভবিষ্যৎ সচেতন হতে পারবে।
স্টিফেন কোভি হচ্ছে বিখ্যাত আমেরিকান শিক্ষাবিদ ও লেখক যিনি দ্য সেভেন হ্যাবিটস অফ হাইলি ইফেকটিভ পিপল বইটি রচনা করেন। তিনি এই বইটিতে মানুষের জীবনে সফলতা আসবে এমন সাতটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি অনেক সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, কিভাবে এসব অভ্যাসগুলো গড়ে তুলে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে উন্নতি করতে পারি। লেখক এসব অভ্যাসগুলোকে প্রধান তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছেন যা আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রথমে যে তিনটি অভ্যাসের কথা বলা হয়েছে তা আমাদের জীবনের ব্যক্তিগত জয়ের জন্য বলা হয়েছে। ১. নিজের কাজের জন্য সব সময় অ্যাকটিভ থাকতে হবে, নিজের কাজের দায়িত্ব নিতে হবে এবং কাজের পূর্বাভাস জেনে বুজঝে কাজ করতে হবে। ২. নিজের জীবনের বা কাজের একটা শেষ লক্ষ্য থাকতে হবে এবং সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে সেই অনুযায়ী কাজে পদক্ষেপ নিতে হবে। ৩. প্রতিটি কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে হবে, সব সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আগে সম্পন্ন করতে হবে। অগ্রাধিকার অনুযায়ী কাজের সময়কে ব্যবস্থাপনা করতে হবে
পরবর্তী তিনটি অভ্যাসের কথা বলা হয়েছে যা পারস্পরিক জয়ের উদ্দেশ্যে লেখা। ১. এখানে সব পক্ষের জন্য যেটি লাভ জনক হয় সেই সমাধান খুঁজে বের করে কাজ করতে হবে। ২. প্রথমে বুঝতে হবে কে কি মতামত প্রকাশ করছে, সবার কথা আগে মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে তারপর নিজের মত প্রকাশ করতে হবে এবং সবাইকে বুঝাতে হবে। ৩. এখানে একা কাজ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে, দলের সকলের সাথে মিলিত ভাবে কাজ করে সেরা ফলাফল অর্জন করতে বলা হয়েছে।
সর্বশেষ একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস রয়েছে যেটি আমাদের সকলের মেনে চলা জরুরী। এখানে সব সময় নিজের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য নিয়মিত সময় ব্যয় করতে হবে।
থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ একজন বিখ্যাত আমেরিকান লেখক নেপোলিয়ন হিলের লেখা একটি অসাধারণ জনপ্রিয় আত্মউন্নয়নমূলক বই। লেখক এ বইটি অনেক বছর গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন সফল ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন এবং কিভাবে সঠিক পরিকল্পনা এবং মানসিকতার মাধ্যমে অর্থ ও সাফল্য অর্জন করা যায়। বইটিতে উল্লেখযোগ্য ১৩টি মূল নীতি তুলে ধরা হয়েছে যা একজন মানুষকে সফল করতে সাহায্য করবে। এসব নীতির মধ্যে কিচছু অন্যতম রয়েছে যেমন, স্পষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা, আত্মবিশ্বাস রাখা, নতুন ধারণা গ্রহণ করা, ধৈর্যশীল হওয়া এবং অবিচল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ বইটিতে লেখক আমাদের দেখিয়েছেন, আমরা যদি নিজের স্বপ্নের উপর বিশ্বাস রাখি এবং তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করি তাহলে আমরা অবশ্যই সফল হতে পারব। এখানে লেখক ব্যাখ্যা করেছেন কেবল ধনী হবার জন্য কঠোর পরিশ্রমই যথেষ্ট নয়, বরং আমাদের ইতিবাচক মানসিকতা এবং সঠিক পরিকল্পনারও প্রয়োজন রয়েছে। যে কোন সফলতার জন্য আমাদের অবশ্যয়ই ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস ও অধ্যবসায় সহকারে কাজ করতে হবে। এটি এমন একটি বই যা আমাদের সাফল্যের পথে চলতে সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।
ডোন্ট সুয়েট দ্য স্মল স্টাফ একটি অসাধারণ বই যা একজন আমেরিকান লেখক, সাইকোথেরাপিস্ট এবং প্রেরণাদায়ক বক্তা রিচার্ড কার্লসন রচনা করেন। এটি একটি আত্ম-উন্নয়নমূলক ও অনুপ্রেরণামূলক বই। এই বইটির মাধ্যমে লেখক আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক ছোটখাটো দুশ্চিন্তা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন। লেখক এখানে ব্যাখ্যা করেছেন আমরা কিভাবে একটি ছোট সমস্যাকে অনেক বড় করে দেখি এবং তার জন্য আমরা মানসিক ভাবে দুশ্চিন্তাই মগ্ন থাকি। তবে এই সকল বিষয়কে ধৈর্য, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও সচেতনতার মাধ্যমে সহজেই মোকাবিলা করা সম্ভব। এই বইয়ে লেখক আমাদের সকলকে ছোটখাটো বিষয়গুলোতে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো থেকে এড়িয়ে চলার কথা বলেছেন।
সেইসাথে ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা বা অতীতের ভুলে আটকে না থেকে বর্তমানকে উপভোগ করার করা তুলে ধরেছেন। এবং তিনি মানুষের জীবনে আসা নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করার চেষ্টা করেছেন। সেইসাথে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক সেইসকল সমস্যার সমাধানের কথাও তিনি বইটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এই বইটিতে ছোটখাটো ভুলত্রুটি মেনে নেওয়ার মানসিকতা গড়ে তোলা, অন্যদের দৃষ্টিকোণ থেকে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করা সহ নানা বিষয়কে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই বইটি পড়ার মাধ্যমে পাঠকগণ অপ্রয়োজনীয় চিন্তা ও দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার একটি মাধ্যম খুঁজে পেতে সক্ষম হবে। এবং তারা তাদের জীবনকে আরও সহজ ও আনন্দময় করে তুলতে পারবে। বলে রাখা ভালো ডোন্ট সুয়েট দ্য স্মল স্টাফ বইটি একটি মানসিক শান্তি ও সুখী জীবনযাপনের জন্য একটি অসাধারণ বই হিসেবে পরিচিত।
ইকিগাই মূলত জাপানের একটি অন্যতম জনপ্রিয় জীবনদর্শন বইয়ের মধ্য একটি। ইকিগাই শব্দটি এসেছে জাপানি ভাষা থেকে। যার অর্থ হলো জীবনের উদ্দেশ্য। হেক্টর গার্সিয়া ও ফ্রান্সেস্ক মিরালেস ইকিগাই দ্য জাপানিজ সিক্রেট টু অ্যা লং অ্যান্ড হ্যাপি লাইফ বইটি রচিত করেছেন। এই বইটিতে কিভাবে একটি মানুষের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করা যায় তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়াও বইয়ে ইকিগাই এর মূল ধারণা তুলে ধরা হয়েছে, যা প্রতিটি পাঠকদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ইকিগাই বইয়ে কীভাবে দর্শন অনুসরণ করলে দীর্ঘ, সুখী ও পূর্ণ জীবন যাপন করা যায়, তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবে বলে রাখা ভালো, এই বইয়ের কাহিনীতে জাপানের অকিনাওয়া অঞ্চলের জীবনধারা থেকে অনুপ্রাণিত, যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শতায়ু মানুষের বসবাস। এই বইয়ের মূল ধারণাগুলোর মধ্য মোট চারটি মূল উপাদান উল্লেখিত রয়েছে,
প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য থাকা উচিত, যা তাকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে এবং ভালোভাবে জীবন কাটাতে সাহায্য করবে, ঠিক সে সকল বিষয় এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও এই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে আপনি যে কাজটি করেন সেই কাজের প্রতি আপনাকে ভালোবাসতে হবে। এবং প্রতিটি কাজের মধ্যে আপনার দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়াও আপনার কাজটি পৃথিবীর বা সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় হতে হবে। এবং লেখকগণ এই বইটিতে মনোযোগ এবং ধৈর্যের কথা বিশেষ ভাবে তুলে ধরেছেন।
কেননা ইকিগাই অনুসরণ করতে গেলে মনোযোগ এবং ধৈর্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। ধৈর্য শুধু দৈনন্দিন জীবনের কাজেই নয়, বরং এটি জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। হেক্টর গার্সিয়া ও ফ্রান্সেস্ক মিরালেসের লেখা এই বইটি মূলত আমাদের পরামর্শ দেয় যে, অত্যধিক প্রতিযোগিতা এবং চাপ এড়িয়ে জীবনকে সহজ এবং প্রাকৃতিকভাবে গ্রহণ করা উচিত। যেটি আমাদের জীবনের সার্থকতা খুঁজে পেতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।
গুড টু গ্রেট জিম কলিন্সের লেখা অন্যতম জনপ্রিয় বইয়ের মধ্য একটি। এটি একটি ব্যবসায়িক ও নেতৃত্ব বিষয়ক বই। এই বইটি দ্বারা লেখক বুঝাতে চেয়েছেন, কিভাবে একটি সাধারণ বা ভালো প্রতিষ্ঠানগুলো সফলতা এবং উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়। এবং আপনার ব্যবসায়িক বিষয়ক নানা প্রস্তাবিত ধারণা ও নীতিগুলো এই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে মজার বিষয় হচ্ছে জিম কলিন্স ও তার দল পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন কোম্পানির কার্যপ্রক্রিয়া ও কৌশল গবেষণা করে সাতটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছেন, যা একজন নেতা, উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানকে ভালো থেকে শ্রেষ্ঠ করে তুলতে পারে। তার মধ্য রয়েছে নেতৃত্ব, সঠিক মানুষ ও জায়গা নির্বাচন করা, বাস্তব এবং সত্যের মুখোমুখি হওয়া ইত্যাদি সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ব্যবসা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একজন সফল ব্যক্তির নেতৃত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লেখক বইটিতে উল্লেখ করতে চেয়েছেন সফল প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব এমন ব্যক্তিদের হাতে থাকে, যারা বিনয়ী ও কঠোর পরিশ্রমী। সেইসাথে সফল ব্যক্তিগণ নিজেদের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নতির দিকেই বেশি মনোযোগ দেন। যার ফলে একটি প্রতিষ্ঠান দ্রুত উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়। এই বইয়ে ব্যবসা বিষয়ক নানান তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে যা একজন সফল ব্যবসায়ীদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই বইটি উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক একটি বই। এবং এই বইটি পড়ার মাধ্যমে নেতৃত্ব, কৌশল ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে যে কেউ কোনো প্রতিষ্ঠানকে নেতৃত্ব দিয়ে সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
অনুপ্রেরণামূলক বই মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এই সকল গল্পের বই মূলত মানুষকে জীবনের কঠিন সময়কে পার হওয়ার শক্তি ও আত্মউন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জনপ্রিয় কিছু অনুপ্রেরণামূলক বই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আসা করছি এই আর্টিকেল দ্বারা আপনারা উপকৃত হবেন। এই সকল তথ্য আমরা নিয়মিত আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি। কাজেই নিত্য নতুন তথ্য পেতে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ধন্যবাদ।
আত্মবিশ্বাস বাড়ানো আমাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আত্মবিশ্বাস একজন মানুষের…
বাংলা সাহিত্যের প্রচলন অনেক আগে থেকেই। বাংলা সাহিত্যে অনেক কিছু শিক্ষণীয় বিষয়ের সাথে বাস্তবতার মিল…
স্বাস্থ্য মানুষের জীবনের এক অমূল্য সম্পদ। অপরদিকে মানসিক প্রশান্তি ছাড়া আমাদের জীবনের সুখ শান্তি কল্পনা…
নাটক সাহিত্যের একটি বিশেষ শাখা। নাটকে আমরা মূলত অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের নড়াচড়া, কথাবার্তা ইত্যাদির মাধ্যমে…
সময় আমাদের জীবনের অনেক বড় একটি অংশ। এই পৃথিবীতে আমাদের সকলের জন্য নির্ধারিত সময় রয়েছে…
সবুজ শ্যামল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। এ দেশের সমুজ শ্যামল মাঠ, বিস্তীর্ণ…