ফেলুদা চরিত্রের জনপ্রিয়তার কারণ ও ফেলুদা গল্পের তালিকা

ফেলুদা চরিত্রের জনপ্রিয়তার কারণ ও ফেলুদা গল্পের তালিকা

ফেলুদা ভারতীয় গণমাধ্যমের একটি জনপ্রিয় চিত্র। ১৯৬৫ সালে সত্যজিৎ রায় এই গল্পটি নির্মাণ করে। এবং পরবর্তীতে এই গল্পটি দুইটি সংখ্যার মাধ্যমে শেষ হয়। ফেলুদা অন্যান্য জনপ্রিয় গল্পের মধ্য একটি। ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি।

১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। এবং ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়।

ফেলুদা চরিত্রের জনপ্রিয়তার কারণ

ফেলুদা চরিত্রের

ফেলুদা একটি জনপ্রিয় সিরিজ। এটির জনপ্রিয়তার সাথে সত্যজিৎ রায়ের দেওয়া একটি কাল্পনিক চরিত্র ফেলুদা সকলের মনকে জয় করে নেয়। সেই সাথে এই চরিত্রটি হয়ে ওঠে সকলের প্রিয়। ফেলুদা ছিল একজন গয়েন্দা। গয়েন্দাগিরি তার একমাত্র নেশা ছিল। তার বাবার নাম জয়কৃষ্ণ মিত্র। এবং তিনি ছিলেন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে গণিত ও সংস্কৃতের শিক্ষক। ফেলুদা গল্পে সে একজন ২৭ বছর বয়সি যুবক। ফেলুদা ছিলেন মারসাল আর্টের একজন বিশেষ দক্ষ। ফেলুদা মাত্র নয় বছর বয়সে তার মা-বাবাকে হারায়। এবং সে তার বড় ভাইয়ের কাছে মানুষ হয়।

মানুষ হিসেবে ফেলুদা সাহসী একজন মানুষ ছিল। তার কর্মকাণ্ড, চলাফেরা, আচার-আচরন ও তার চরিত্রকে দর্শকদের কাছে বিশেষ ভাবে তুলে ধরা হয়। গয়েন্দাগিরি শুরুর আগে ফেলুদা কিছুদিন বেসরকারি চাকরি করেছেন। ফেলুদার নেশা বলতে ছিল সিগারেট। তার সিগারেটের প্রিয় ব্রান্ড চারমিনার। ফেলুদা নিয়মিত শরীরচর্চা ও ব্যায়ামে অভ্যস্ত ছিলেন। চারিত্রিক ও একজন ভালো মানুষের দিক দিয়ে ফেলুদা চরিত্র অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এবং পরবর্তীতে এটি টিভি সিরিজের মাধ্যমে আরও ব্যপক ভাবে সারা ফেলে। এবং এক কথায় বলা যায় ফেলুদা চরিত্রের ব্যক্তিত্ব জনপ্রিয়তা পাওয়ার অন্যতম কারণের মধ্য একটি।

ফেলুদা গল্পের তালিকা

ফেলুদা গল্পের তালিকা

ফেলুদা একটি জনপ্রিয় গল্প। বই প্রেমিদের পছন্দের তালিকার মধ্য ফেলুদা গল্প একটি। সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়। ফেলুদা সিরিজের মোট পর্ব ৩৫ টি। এই গল্পে ফেলুদা একজন গয়েন্দা। গয়েন্দার সাথে আরও নানা চরিত্রে দেখা যায় ফেলুদাকে। নিচে ফেলুদা গল্পের তালিকা উল্লেখ করা হলোঃ

ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি

ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি

ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি গল্পের প্রথমদিকে মিত্তিরের পরিচয় দেওয়া হয়। এখানে ফেলুদাকে একটি রহস্যের সমাধান করতে দেখা যায়। গল্পে দেখা যায় রাজেন বাবু, দার্জিলিং-এ বসবাসকারী একজন সম্মানিত বয়স্ক ভদ্রলোক একটি হুমকিমূলক চিঠি পান। এবং সেই চিঠিকে কেন্দ্র করে ফেলুদার গয়েন্দাগিরির শুরু হয়। ফেলুদা, একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ এবং তার চাচাতো ভাই তোপশে, যারা দার্জিলিংয়ে ছুটি কাটাচ্ছিলেন, রহস্য সমাধান করতে রাজেন বাবুর সাথে দেখা করেন। একসময় প্রাথমিক তদন্তের পরে ফেলুদা তিনজনের একজনকে চিঠি পাঠানোর জন্য দায়ী বলে সন্দেহ করে।

এর কারণ ডাঃ ফোনি মিত্র যিনি রাজেন বাবুর চিকিৎসক। যেহেতু তার উন্নতিশীল অনুশীলন নেই বললেই চলে। সেই দিক দিয়ে সে যদি রাজেন বাবুকে একটি হুমকানিমুলক চিঠি দিয়ে তাকে আরো চাপের মুখে ফেলে দেয় তাহলে এটি ডক্টর মিত্রকে আরও অর্থ উপার্জন করতে সহায়তা করবে। অন্যদিকে ফেলুদা মিঃ ঘোষালকেও সন্দেহ করেন। কারণ তিনি একজন প্রাচীন জিনিসের বিশেষজ্ঞ। রাজেন বাবু প্রাচীন জিনিসের প্রতি গভীর আগ্রহ তৈরি করেছেন এবং তা সংগ্রহ শুরু করেছেন। তাই, তিনি মিঃ ঘোষালের প্রতিদ্বন্দ্বী। এবং তিনি অসুস্থ হলে, তিনি কিউরিও কিনতে বাড়ির বাইরে যেতে পারবেন না এবং এইভাবে মিঃ ঘোষাল সেগুলি কিনতে সক্ষম হবেন। এছারাও আরো নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেলুদার প্রথম সিরিজ তৈরি করা হয়।

কৈলাস চৌধুরীর পাথর

কৈলাস চৌধুরীর পাথর

কৈলাস চৌধুরীর পাথর সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা গল্পের মধ্য অন্যতম একটি বই। এটি ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত হয়। কৈলাস চৌধুরীর পাথর বইটিতে ফেলুদা একটি মূল্যবান পাথরের রহস্যের উদঘাটন করে। অনেক ঘটনার সন্মুখীন হওয়ার পরে সে একসময় জানতে পারে তার মক্কেলের একটি যমজ ভাই আছে। এবং সে নানা বিপদের মধ্য দিয়ে সেই রহস্যের আসল সত্যতা বেরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। এই সকল ঘটনাকে কেন্দ্র করে কৈলাস চৌধুরীর পাথর বইটি লেখা হয়েছে।

শেয়াল-দেবতা রহস্য

শেয়াল-দেবতা রহস্য

শেয়াল-দেবতা রহস্য ফেলুদা গল্পের একটি অংশ। প্রাচীন যুগের মূর্তি নিয়ে এই গল্পটি নির্মিতি করা হয়েছে। প্রাচীন কালের ঘটনা ও এর কাহিনী এই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে মিশরীয় দেবতা আনুবিসের মূর্তি হারিয়ে যায় এবং সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বইটি লেখা হয়।

সমাদ্দারের চাবি

সমাদ্দারের চাবি

সমাদ্দারের চাবি ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইয়ে রাধারামণবাবু নামে একজন ব্যক্তির কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। এবং সে মৃত্যুর আগমুহূর্তে একটি চাবি সম্পর্কে বলে যান এবং সেই চাবির শব্দের জট খুলতে ফেলুদা রহস্যের উদঘাটন করে। এবং সেই সাথে বামুনগাছির ছোট্ট বাড়ির কাহিনী ও তোপসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমাদ্দারের চাবি বইটি লেখা হয়েছে।

ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা

ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা

ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত গোয়েন্দা কাহিনী ফেলুদা সিরিজের একটি বই। ফেলুদা সিরিজ একটি গয়েন্দা কাহিনীকে নিয়ে গঠিত। এই বইটিতে একজন বৃদ্ধের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। গল্পে দেখা যায় একজন বৃদ্ধ ফেলুদাকে চিঠি লিখে তার বাড়িতে আসতে বলেন। এবং তিনি ফেলুদাকে ৪টি বই উপহার দেন। সে ফেলুদাকে একটি হেঁয়ালির সমাধান করতে বলেন এবং তার পরিবর্তে ফরাসী সাহিত্যিক এমিল গ্যাবোরিওর লেখা দুর্লভ ৪টি বই দেওয়ার কথা বলেন। এই বইটিতে ফেলুদাকে নানান রহস্যের মধ্য দিয়ে যেতে দেখা যায়।

গোলকধাম রহস্য

গোলকধাম রহস্য

গোলকধাম রহস্য ফেলুদা সিরিজের একটি অংশ। সত্যজিত রায়ের লেখা এই বইটি ১৯৮০ সালে প্রকাশিত হয়। ফেলুদা গয়েন্দাগিরি ও নানা রহস্যের দ্বারা এই গল্পটি তৈরি। গোলকধাম রহস্য বইটিতে একজন বাঙালি বায়কেমিস্ট নিহার রঞ্জন দত্তের কাহিনী উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে নিহার বাবু একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। তিনি আমেরিকাতে ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করেন। তার সেই সময় বেশ সুনাম ছিল। তার খুব কাছের সহকারী ছিলেন সুপ্রকাশ চৌধুরী। তিনি নিহার বাবুর পিছনে পিছনে শত্রুতা করতো। এবং একসময় সে লোভের কারণে নিহার বাবুর পরীক্ষায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাকে অন্ধ করে দেন। এবং নিহার বাবুর সে সময় কলকাতা ফিরে আসতে হয়।

একদিন নিহার বাবুর কলকাতার বাসাতে ফেলুদা ডাকাতি কেস নিয়ে আসেন। এবং সে দেখেন নিহার বাবুর গবেষণার কাগজ-পত্র ও নগদ ৩৩ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। এবং সেই সাথে নিহার বাবুর দুই ভাড়াটিয়া সুখওয়ানি এবং দস্তুরের একজন দস্তুর খুন হন। পরে ফেলুদা জানতে পারে ওই কাগজ-পত্র ও টাকা নিহার বাবুর ব্যক্তিগত সহকারী, বিশ্বস্ত রঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায় চুরি করেছিলেন। এবং সে আরো জানতে পারে দপ্তর খুন হয় নিহার বাবুর দ্বারা। ফেলুদা সিরিজের অন্যান্য গল্পের সাথে এই গল্পেও অনেক রহস্যের উদঘাটন করতে দেখা যায় ফেলুদাকে। এবং বলা যায়, অনেক রহস্যকে কেন্দ্র করে গোলকধাম রহস্য বইটি লেখা হয়েছে।

নেপোলিয়নের চিঠি

নেপোলিয়নের চিঠি

নেপোলিয়নের চিঠি ফেলুদা পর্বের মধ্য একটি। আমরা সকলেই জানি ফেলুদা সিরিজ গয়েন্দাগিরি ও নানা রহস্য দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। সেই সাথে এই গল্পের কাল্পনিক চরিত্র ফেলুদার আচার-আচরণ দর্শকদের নানা ভাবে আকৃষ্ট করেছে। নেপোলিয়নের চিঠি বইটিতে ফেলুদাকে একটি চিঠির রহস্যকে উন্মোচন করতে দেখা যায়। এবং গল্পে দেখা যায়, ফেলুদার এই চিঠির তদন্ত শুরু হয় কিছুটা অপ্রত্যাশিতভাবে। ফেলুদার পরিচিতের জন্য সে একটি উপহার কিনতে খেলনার দোকানে যায়। এবং সেখানে অনিরুদ্ধ হালদার নামে এক তরুণ ভক্তের সাথে দেখা হয় তার।

অনিরুদ্ধ হালদার তাকে জিজ্ঞাসা করে তার হারিয়ে যাওয়া তোঁতা পাখি খুঁজে পাওয়া যাবে কি না। ছোট ছেলেটিকে তার পাখি খুঁজে পাওয়ার চেয়ে কিছুটা সময় দেওয়ার জন্য ফেলুদা রাজি হয়। এবং গল্পে আরো দেখা যায় অনিরুদ্ধের দাদা নামে একজন প্রত্নসামগ্রী সংগ্রাহক কে মৃত পাওয়া গেছে। এবং সেখান থেকেই এই নেপোলিয়নের চিঠির কাহিনী শুরু হয়। এবং দেখা যায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, এবং ফেলুদার বুদ্ধি ও দক্ষতার সাথে চিঠির গোপন রহস্য উদ্ঘাটনে সে তার কার্যকলাপ চালিয়ে যায়। এই সকল তথ্য নিয়েই এই বইটি লেখা হয়েছে।

অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য

অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য

অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য ফেলুদা সিরিজের একটি বিখ্যাত গল্পের মধ্য একটি। এই গল্পে নানা ভাবে রহস্যের সত্যতা যাচায় করতে দেখা যায় ফেলুদাকে। এই কাহিনীর মূল ঘটনা অম্বর সেন নামের একজন ধনী ব্যক্তি হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে। গল্পে দেখা যায় ফেলুদা সহ তার সঙ্গিরা মিলে এই কাহিনীর আসল রহস্যকে খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করে।

এবং তাদের তদন্তে বেরিয়ে আসে নানা রকমের তথ্য।যা সকলকে চিন্তিতি করে দেয়। এবং নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে পরিশেষে দেখা যায়, ফেলুদা তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণী ক্ষমতা দিয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করেন। এবং সন্দেহভাজনদের সাথে কথা বলেন, যাতে ধীরে ধীরে আসল ঘটনার সত্য বেরিয়ে আসে। এই গল্পে প্রচুর রহস্য তুলে ধরা হয়েছে। যা দর্শকদের নানা ভাবে আকর্ষণ করবে।

জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা

জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা

জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা ফেলুদা সিরিজের সত্যজিৎ রায়ের লেখা একটি বিশেষ গল্প। এটি সন্দেশ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৩ সালে। এই গল্পে দেখা যায় মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়ের এক স্বর্ণমুদ্রা কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। সেই হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণমুদ্রার মামলার তদন্তের জন্য ফেলুদাকে জটায়ু এবং তপেশ ত্রয়ীকে পানিহাটিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ফেলুদা সেখানে জানতে পারে, ক্লায়েন্ট শঙ্কর প্রসাদ মিত্রের কাছে ১২ টি স্বর্ণমুদ্রার সংগ্রহ ছিল। এবং তার শেষ জন্মদিনে ১২ টি স্বর্ণমুদ্রার মধ্য একটি তার এক বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি চুরি করেছিল। এবং সকল তথ্য শোনার পরে ফেলুরা সেই জটিল রহস্যের সমাধানের উদ্দেশ্যে তদন্ত শুরু করেন। এবং দেখা যায় তারা একের পর এক উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার সম্মুখীন হয়। এবং তাদের তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণী ক্ষমতা এই কাহিনীকে আরও রোমাঞ্চকর করে তোলে।

এবার কান্ড কেদারনাথে

এবার কান্ড কেদারনাথে

এবার কান্ড কেদারনাথে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজের জনপ্রিয় বইয়ের মধ্য একটি। এই গল্পে ফেলুদাকে নানা রহস্যের সম্মুখীন হতে দেখা যায়। গল্পটা শুরু হয় ফেলুদাদের কলকাতার বাড়িতে ভারতেরই কোন এক প্রাক্তন রাজ্যের রাজসহকারীর আসা দিয়ে। ব্রিটিশ শাসন আমলে রাজা চন্দ্রদেও তার রোগ সারিয়ে দেওয়ার জন্যে হৃষিকেশের একজন আয়ুর্বেদিক ডাক্তারকে গোপনে উপহারস্বরূপ একটি মহামূল্য উপহার দেন।

এবং ঘটনাটি পরবর্তীতে জানাজানি হওয়ায় সেই ডাক্তারের যেন কোনো সমস্যা না হয় তাই ফেলুদা সেই ডাক্তার কে অন্য কারো আগে খুঁজে বের করে বিপদমুক্ত করেন। এছারাও ফেলুদাকে আরো রহস্যময় ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। এইসকল কাহিনী দ্বারা এবার কান্ড কেদারনাথে বইটি লেখা হয়।

বোসপুকুরে খুনখারাপি

বোসপুকুরে খুনখারাপি

বোসপুকুরে খুনখারাপি বইটি সত্যজিৎ রায়ের লেখা ফেলুদা গল্পের একটি অংশ। এই বইটি ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত হয়। বইটিতে ফেলুদাকে একটি খুনের তদন্ত করতে দেখা যায়। গল্পে দেখা যায় ফেলুদা বোসপুকুর গ্রামের এক হত্যা রহস্যের সমাধানের জন্য সেখানে উপস্থিত হয়। এই হত্যার ঘটনায় ফেলুদা ও তার সঙ্গিদের আরও গভীরে অনুসন্ধান করতে বাধ্য করে। এবং একসময় দেখা যায় ফেলুদা এই কেস সঠিক ভাবে সমাধানের চেষ্টা করে। এছারাও এই গল্পে উত্তেজনা, রহস্য এবং কৌতূহলের উপস্থিতি থাকায় পাঠকদের নানা ভাবে আকৃষ্ট করে তোলে।

অপ্সরা থিয়েটারের মামলা

অপ্সরা থিয়েটারের মামলা

অপ্সরা থিয়েটারের মামলা ফেলুদা সিরিজের আরেকটি অন্যতম বই। ফেলুদা গল্পের জনপ্রিয়তা অধিক। কেননা সত্যজিৎ রায়ের দেয়া কাল্পনিক চরিত্র ফেলুদার আচার-আচরন ও তার চলাফেরা ও কার্যকলাপে বইপ্রেমিদের নানা ভাবে আকৃষ্ট করে এসেছে। আপনারা প্রায় সকলেই জানেন ফেলুদা একটি গয়েন্দাগিরি গল্প নিয়ে তৈরি। অন্যান্য সিরিজের সাথে অপ্সরা থিয়েটারের মামলা বইটিও গয়েন্দাগিরির গল্প নিয়ে গঠিত।

এই গল্পে দেখা যায়, ফেলুদা এবং তার সঙ্গী তোপসে অপ্সরা থিয়েটারের একটি নাটকের প্রস্তুতি নেয়। এবং সেই সময় অপ্সরা থিয়েটারে একটি হত্যার ঘটনা ঘটে। এবং এই হত্যার রহস্য বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। এবং সেই রহস্যের খোঁজ করতে ফেলুদা তার গয়েন্দাগিরির কার্যক্রম শুরু করে। যা এই কাহিনীকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

ভূস্বর্গ ভয়ংকর

ভূস্বর্গ ভয়ংকর

ভূস্বর্গ ভয়ংকর ফেলুদা সিরিজের অন্যতম গল্পের মধ্য একটি। এই গল্পে ফেলুদা ও তার সঙ্গিদের কাশ্মিরের একটি রহস্যময় ঘটনার উদঘাটন করতে দেখা যায়। গল্পটিতে ফেলুদা এবং তার দল কাশ্মীরের শ্রীনগরে যান এবং তারা সেখানে একটি রহস্য খুঁজে পান। এই গল্পের আলোচ্য বিষয় কাশ্মিরের বিচারক রহস্যময় অবস্থায় মারা যায়। তাকে হত্যা করার পরে তার ডান হাতে পরা একটি মূল্যবান হীরার আংটি চুরি হয়ে যায়। এবং সেই রহস্যর সঠিক তদন্ত করতে ফেলুদা ও তার সঙ্গিরা কাজ শুরু করে। এবং একসময় স্বাভাবিকভাবেই ফেলুদা এই রহস্যের সমাধান করে।

শকুন্তলার কণ্ঠহার

শকুন্তলার কণ্ঠহার

সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজের গল্পের মধ্য শকুন্তলার কণ্ঠহার একটি। এই বইটিতে ফেলুদাকে স্বাভাবিকভাবেই নতুন একটি রহস্যকে সমাধান করতে দেখা যায়। গল্পের শুরুতে দেখা যায় ফেলুদা, তোপসে এবং লালমোহন বাবু লক্ষ্ণৌ ভ্রমণ করতে গিয়ে হেক্টর জয়ন্ত বিশ্বাসের সঙ্গে পরিচয় হয়। এবং পরবর্তীতে জয়ন্ত বিশ্বাস তার বাসায় একটি পার্টিতে ফেলুদাদের আমন্ত্রন করেন। জয়ন্ত বিশ্বাসের শাশুড়ি ছিলেন একজন প্রাক্তন খ্রিস্টান অভিনেত্রী। তার নাম শকুন্তলা দেবী। পার্টি চলাকালীন সময় শকুন্তলা দেবীর মূল্যবান কন্ঠহার চুরি হয়ে যায়। সেই চুরির তদন্তে জড়িয়ে পড়ে ফেলুদা। এবং এই কাহিনীতে জয়ন্তবাবুর কন্যা মেরি শীলা বিশ্বাসের একটি গুরুপ্তপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এবং পরিশেষে ফেলুদা আসল রহস্যকে বেরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।

লন্ডনে ফেলুদা

লন্ডনে ফেলুদা

লন্ডনে ফেলুদা সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজের একটি অনন্য গল্প। সত্যজিৎ রায়ের জনপ্রিয় গল্পের মধ্য ফেলুদা সিরিজ অন্যতম। ফেলুদা সিরিজে সকল গল্পে দেখা যায় ফেলুদা একজন গয়েন্দা। সে প্রায় সকল ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীকে বেরিয়ে আনে। তেমনি লন্ডনে ফেলুদা গল্পেও ফেলুদা একটি ঘটনার তদন্ত করতে দেখা যায়। এই গল্পে দেখা যায় ফেলুদা, তোপসে এবং লালমোহন গাঙ্গুলি লন্ডনে একটি রহস্য সমাধানের জন্য যাত্রা করে।

এবং তারা দেখতে পারে, লন্ডনে একইসাথে দুই বন্ধু রহস্যময় ভাবে দুর্ঘটনার শিকার হয়। একজন আহত ও আরেকজন নিহত হন। আহত হওয়া ব্যক্তি স্মৃতি হারানো আর ফেরার মাঝে অবস্থান করছে। এবং সেই সাথে কেটে যায় চল্লিশেরও বেশি বছর। এর মধ্যে ফেলুদার গয়েন্দাগিরির কিছু দৃশ্য গল্পে দেখা যায়। লন্ডনের ঐতিহাসিক পরিবেশে, ফেলুদা তার তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কেসটির পেছনের সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন করেন। এবং সেই সাথে বলা যায়, এই গল্পে প্রচুর রহস্য ও উত্তেজনায় ঘেরা।

শেষ কথা

ফেলুদা বা প্রদোষ মিত্র, সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট এক অনন্য গোয়েন্দা চরিত্র। এই গল্পে লেখক নানা ভাবে তার কাল্পনিক চরিত্র ফেলুদাকে ফুটিয়ে তুলেছে। সত্যজিৎ রায়ের প্রতিভা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা, এবং অভিযানের রোমাঞ্চকর দিকগুলি পাঠকদের মুগ্ধ করেছে দশক ধরে। সেই সাথে ফেলুদা গল্পের সকল কাহিনী, চরিত্র, অবস্থান ও কার্যকলাপ দর্শকদের নানা ভাবে আকৃষ্ট করেছে। এটি বইপ্রেমিদের কাছে ব্যপক ভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ফেলুদা গল্পের উপর ভিত্তি করে একাধিক কমিকস তৈরি করা হয়েছে। গ্যাংটকে গন্ডগোল এই সিরিজের প্রথম কমিকস। এছারাও ফেলুদা গল্পের চিত্রনাট্য ও ছবি নির্মাণ করা হয়েছে। । ফলে এটির জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে এই চরিত্রটি।

About the Author: Sumon

হ্যালো বন্ধুরা, আমি এম মোহসিন আলী সুমন। আমি বিডিইবুক সাইতে একজন কন্টেন্ট রাইটার। আমি সাধারণত বাংলা ভাষার বিভিন্ন সিরিজ গল্পের চরিত্র এবং লেখক নিয়ে লেখালিখি করে থাকি। আশাকরি আমার লেখা পড়ে এসব সিরিজ সম্পর্কে আপনাদের স্পষ্ট ধারণা হবে।

You May Also Like

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।