উপন্যাস লেখার নিয়ম এবং উপন্যাস লেখার কিছু টিপস

উপন্যাস লেখার নিয়ম এবং উপন্যাস লেখার কিছু টিপস

আমাদের ভেতরে অনেকরই লেখালেখির অভ্যাস আছে, হয়ত বা কবিতা, ছোট গল্প লেখেনও অনেকে। কিন্তু কখনও কি পুরো একটা উপন্যাস লেখার কথা মাথায় এসেছে? আর লেখার কথা মাথায় আসলেও উপন্যাস লেখার নিয়ম জানেন কি? উপন্যাস লেখা সৃজনশীল কাজ যা আপনার কল্পনাশক্তি ও লেখার দক্ষতাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে। বলতে পারেন এটি একটি শিল্প যেখানে শব্দকে যুক্ত করে জীবন্ত জগত সৃষ্টি করতে হয়। নতুন লেখকদের কাছে কঠিন মনে হলেও সঠিক দিকনির্দেশনা ও কৌশল জানলে উপন্যাস লেখা অনেক সহজ হয়ে যায়। এই আর্টিকেলে উপন্যাস লেখার নিয়ম, পরিকল্পনা, চরিত্র গঠন, প্লট নির্মাণ, লেখার স্টাইল নির্বাচন এবং উপন্যাস লেখার কিছু টিপস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

উপন্যাস লেখার নিয়ম

উপন্যাস লেখার নিয়ম ও টিপস জানার আগে কিছু বিষয় পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত, যেমন আমি আপনাকে শুধু উপন্যাস লেখার নিয়ম সম্পর্কে একটি বেসিক ধারণা দিতে পারব। এই আর্টিকেল পড়লে আপনি জানতে পারবেন উপন্যাস লেখার সময় কি কি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে, কিভাবে একটা উপন্যাসের স্ট্রাকচার তৈরি করতে হবে, লেখার সময় কোন কোন বিষয়গুলো ইগনোর করতে হবে আরও অনেক দরকারি বিষয়। তবে এই আর্টিকেল পড়ার পরে আপনাকেই আপনার কল্পনাশক্তি ও লেখার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে উপন্যাস লেখতে হবে। আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাকে শুধু পথ দেখাতে পারব কিন্তু সেই পথে আপনাকেই চলতে হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন, তাহলে চলুন এবার উপন্যাস লেখার নিয়ম এবং উপন্যাস লেখার কিছু টিপস জেনে নেই-

১. উপন্যাসের পরিকল্পনা

উপন্যাস লেখার জন্য শুরুতেই দরকার একটি সঠিক পরিকল্পনা। পরিকল্পনা আপনাকে গল্পের ভিত্তি তৈরি এবং লেখার প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সাহায্য করবে। গল্প বা কাহিনির শুরুর প্রেক্ষাপট যেন যথেষ্ট আকর্ষণীয় আর সাবলীল হয় সেই বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে, কথায় বলে- “First Impression is the Last Impression”.

উপন্যাসের পরিকল্পনা করার সময় যেই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে তা হল-

ক. থিম নির্বাচন

থিম আপনার গল্পের কেন্দ্রীয় ধারণা, অর্থাৎ আপনার উপন্যাস কি ধরণের হবে। কিছু জনপ্রিয় থিমের উদাহরণঃ

প্রেমঃ প্রেমের জটিলতা, সম্পর্কের টানাপোড়েন, বিচ্ছেদ এবং পুনর্মিলন।

রহস্যঃ অপরাধ, গুপ্ত তথ্য এবং শত্রুতার জাল।

সামাজিক সমস্যাঃ দারিদ্র্য, বর্ণবাদ বা রাজনৈতিক সংকট।

থিম নির্বাচন করার সময় ভাবুন, আপনি কি বার্তা দিতে চান? পাঠকের মনে কোন অনুভূতি বা প্রশ্ন সৃষ্টি করতে চান? একটি শক্তিশালী থিম আপনার কাহিনীকে প্রভাবিত করতে সাহায্য করবে।

উদাহরণঃ যদি আপনি প্রেমের থিম নির্বাচন করেন, তাহলে গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে প্রেমের আকর্ষণ এবং বিচ্ছেদ সম্পর্কিত জটিলতা তুলে ধরতে পারেন।

খ. চরিত্র গঠন

চরিত্র গঠন একটি সফল উপন্যাস লেখার জন্য অপরিহার্য। একটি চরিত্র কেবল একটি নাম নয়, এটি একটি জীবন্ত ব্যক্তি, যার অনুভূতি, লক্ষ্য ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। চরিত্র এমন হতে হবে যেন তা পাঠকের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে, পাঠক চরিত্রের সাথে কানেক্ট করতে পারে। একটি উপন্যাসের একাধিক চরিত্র থাকতে পারে এবং থাকে। যেমন-

  • প্রধান চরিত্রঃ যে চরিত্র কাহিনীর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে, যাকে ঘিরেই কাহিনী সামনের দিকে এগিয়ে চলে। প্রধান চরিত্রের লক্ষ্য ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। উদাহরণঃ মনে করুন আপনার উপন্যাসের প্রধান চরিত্র একজন সাংবাদিক, যার লক্ষ্য একটি বড় সংবাদ প্রকাশ করা, কিন্তু সে যখন একটি বিপদজনক সত্যের সম্মুখীন হয়, তখন তার জন্য কেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি তুলে ধরুন।
  • গৌণ বা সাইড চরিত্রঃ এই সাইড চরিত্রগুলো প্রধান চরিত্রের সহায়ক বা প্রতিপক্ষ হতে পারে। তাদের উপন্যাসে তাদের রোল এবং উদ্দেশ্য স্পষ্ট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণঃ প্রধান চরিত্র সাংবাদিকের একজন বন্ধু আছে যে তাকে সাহায্য করে, কিন্তু তার নিজেরও একটি গোপন উদ্দেশ্য আছে। সাংবাদিকের এই বন্ধুই হল সাইড চরিত্র।

গ. চরিত্রের বৈশিষ্ট্য

একটি চরিত্রের বৈশিষ্ট্যই সেই চরিত্রকে জীবন্ত করে তোলে, পাঠক সেই চরিত্রকে পড়ার সময় অনুভব করতে পারে। চরিত্রের বৈশিষ্ট্য গুলোর মধ্যে থাকতে পারে-

  • ব্যক্তিত্বঃ চরিত্রের আচরণ, কল্পনা এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া।
  • পটভূমিঃ চরিত্রের অতীত, যা তার বর্তমান সিদ্ধান্ত এবং আচরণকে প্রভাবিত করে।
  • পরিবর্তনঃ গল্পের অগ্রগতির সঙ্গে চরিত্রের পরিবর্তন ঘটে কি না।

২. প্লট নির্মাণ

উপন্যাসের পরিকল্পনা করার পরের ধাপ হল প্লট বা গল্পের কাঠামো তৈরি করা। যেই কাহিনী ধরে উপন্যাস এগিয়ে যাবে সেটিই হল প্লট। একটি প্লটকে আলাদা আলাদা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারেঃ

ক. মূল সংকট বা চ্যালেঞ্জ

প্রতিটি গল্পে একটি প্রধান সংকট থাকা উচিত। এটি গল্পের গতিশীলতা তৈরি করে এবং পাঠককে পড়তে আগ্রহী করে। সংকটটি সাধারণত হতে পারে প্রধান চরিত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ, যা তাকে মোকাবিলা করতে হবে। আকর্ষণীয় প্লট সবসময় উপন্যাসকে পড়ার জন্য পাঠককে বাধ্য করে।

উদাহরণঃ একটি রহস্য গল্পে, একটি খুনের ঘটনা ঘটতে পারে যেখানে প্রধান চরিত্রকে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। আবার দেখানো যেতে পারে, খুনের জন্য সবাই প্রধান চরিত্রকেই সন্দেহ করছে, এই সন্দেহ থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই রহস্যের সমাধান করতে হবে।

খ. ঘটনা প্রবাহ

ঘটনাগুলি যেন যুক্তিসঙ্গত এবং ধারাবাহিকভাবে প্রবাহিত হয় তা নিশ্চিত করুন। একটি ঘটনা যদি অন্য ঘটনার ফলে ঘটে তাহলে তা পাঠককে সহজেই প্রবাহিত করে। কিন্তু ঘটনা প্রবাহ যদি জটিল বা কনফিউজিং হয় তাহলে পাঠক অনেক সময় আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। যুক্তিহীন ঘটনা গল্পের গতিকে ধীর করে দিতে পারে, তো এই বিষয়ে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে।

উদাহরণঃ যদি আপনার চরিত্র একটি গোপন তথ্য পায়, এটি তার পরবর্তী পদক্ষেপকে কিভাবে প্রভাবিত করে তা বিস্তারিতভাবে দেখান।

গ. সমাধান

গল্পের শেষে সংকটের যৌক্তিক সমাধান হওয়া উচিত। পাঠকের জন্য একটি সন্তোষজনক সমাপ্তি নিশ্চিত করা আপনার লেখার সফলতার চাবিকাঠি।

উদাহরণঃ একটি থ্রিলার গল্পের শেষে যখন প্রধান চরিত্র অপরাধীকে ধরতে সক্ষম হয়, তখন পাঠক সন্তুষ্ট হয়। সমাপ্তি হ্যাপি বা স্যাড হতে পারে আবার অনেক সময় উন্মুক্ত সমাপ্তিও হতে পারে।

৩. লেখার শৈলী বা স্টাইল

লেখার শৈলী আপনার গল্পের ধরণ ও পরিবেশনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যেমন-

ক. বর্ণনা

আপনার কাহিনীর পরিবেশ এবং চরিত্রগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা দিন। এতে করে পাঠকের কাছে সেই স্থান বা চরিত্রকে কল্পনা করতে সহজ হয়।

  • স্থানঃ কাহিনীর পটভূমি যেখানে বর্ণনা করবেন তা হতে পারে একটি শহর, গ্রাম বা প্রাকৃতিক দৃশ্য, সেটিকে আপনার বর্ণনার মাধ্যমে জীবন্ত করুন।

উদাহরণঃ নীল আকাশের নিচে সবুজ গাছপালার মধ্যে, একটি পুরনো বাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। বাড়ির ঠিক পেছন দিক দিয়ে বয়ে গেছে ছোট এক নদী।

  • পাত্রঃ চরিত্রের শারীরিক গঠন এবং মানসিক বৈশিষ্ট্য, এমনকি কি পোশাক পরে তাও আপনার বর্ণনার মাধ্যমে তুলে ধরুন। এই ক্ষেত্রে আপনি ইচ্ছা করলে উপমা ব্যবহার করতে পারেন।

উদাহরণঃ তার চোখের দীপ্তি যেন রাতের আকাশের তারা। তার মন যেন সাগরের মতো বিশাল।

খ. সংলাপ

সংলাপ চরিত্রগুলোর মধ্যে সম্পর্ক প্রকাশ করে। এটি গল্পের গতিকে ত্বরান্বিত করে এবং চরিত্রের বৈশিষ্ট্যকে ফুটিয়ে তোলে।

  • ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যঃ চরিত্রের ভাষা ও কথা বলার স্টাইল তাদের ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করে।

উদাহরণঃ “তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে পারো না!” – এই লাইন একটি তীব্র আবেগ প্রকাশ করে এবং পাঠকের মনে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

গ. আবেগ

পাঠকদের আবেগে জড়িয়ে ফেলতে আপনার গল্পে আবেগ থাকতে হবে। চরিত্রগুলোর অনুভূতি স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলুন। চরিত্রগুলোর অনুভূতি যখন পাঠক অনুভব করতে পারবে তখন সে নিজেও চরিত্রের সাথে কানেক্টেড ফিল করবে, তার দুঃখে কষ্ট পাবে এবং তার আনন্দে আনন্দিত হবে।

৪. সম্পাদনা এবং পুনরায় লেখা

লেখার পর সম্পাদনা একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। এর মাধ্যমে আপনি আপনার লেখাকে আরও ভালো করতে পারবেন। লেখার সময় অনেক বিষয় মাথায় আসে না, পরে লেখা আবার চেক করলে সেই বিষয়গুলো ধরা পরে। তাই উপন্যাস লেখার নিয়মগুলোর মধ্যে সম্পাদনা এবং পুনরায় লেখা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ।

  • প্রথম ড্রাফটঃ আপনার প্রথম ড্রাফটকে লেখার পর তা নিজে নিজে পড়ুন, জোরে জোরে শব্দ করে পড়তে পারেন এতে করে কোন শব্দের বা লাইনের আমিল থাকলে তা ধরা পরবে।
  • সম্পাদনাঃ লেখা পড়ার সময় যে অংশ গুলো অযাচিত মনে হবে তা বাদ দিন, বাক্যগুলোর গঠন ঠিক করুন এবং শব্দ নির্বাচন মনোযোগ দিন।
  • পুনরায় লেখাঃ লেখার সময় নতুন ধারণা যুক্ত করুন এবং কাহিনীতে পরিবর্তন আনুন। এটি আপনার গল্পকে আরও আকর্ষণীয় করতে সাহায্য করবে।

৫. লেখার অভ্যাস করা

লেখা একটি দক্ষতা এবং এই দক্ষতা বাড়ানোর জন্য দরকার অভ্যাস। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় লেখার জন্য বসুন এবং এই সময় শুধু লেখার জন্যই বরাদ্দ রাখুন। এতে করে আপনার লেখার দক্ষতা বাড়াবে।

ক. প্রতিদিন লিখুন

প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি আপনার লেখার অভ্যাসকে বজায় রাখতে সহায়তা করবে।

খ. লক্ষ্য নির্ধারণ

লেখার জন্য দৈনিক বা সাপ্তাহিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এতেকরে আপনি আপনার সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারবেন। যেমনঃ দৈনিক ৫০০ শব্দ লেখা বা সাপ্তাহিক একটি অধ্যায় শেষ করার টার্গেট নিতে পারেন। আপনার সময়ের উপরে ভিত্তি করে এই টার্গেট সেট করতে পারেন।

৬. অনুপ্রেরণা নেওয়া

লেখার অনুপ্রেরণা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন উৎস ব্যবহার করতে পারেন, যেমনঃ অন্য লেখকদের লেখা, সিনেমা, রিয়েল লাইফ বা যেকোনো কিছু থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন।

  • বইঃ ভালো লেখকদের বই পড়ুন। তাদের লেখা থেকে শিখুন এবং অনুপ্রাণিত হন।
  • চলচ্চিত্র ও নাটকঃ সিনেমা এবং নাটক দেখতে পারেন, যা আপনাকে নতুন নতুন লেখার ধারণা দেবে।
  • প্রকৃতি ও পরিবেশঃ প্রকৃতির মাঝে সময় কাটান। নতুন অনুভূতি এবং চিন্তা আসতে পারে।

৭. আত্মবিশ্বাস রাখা

লেখার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের উপরে কনফিডেন্স না থাকলে কোন কাজই করা সম্ভব নয়। উপন্যাস যেহেতু আকারে বড় হয় তাই লেখা শুরু করার পরে সে লেখা চালিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস নিজের ভেতরে থাকতে হবে। কোন কারণে আত্মবিশ্বাস কমে যেতেই পারে কিন্তু নিজের লক্ষ্য মনে করে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হবে। যদি একবার একটি পুরো উপন্যাস লিখে শেষ করতে পারেন তাহলে বিশ্বাস করুন পরবর্তীতে আপনার আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে থাকবে। তাই প্রথম লেখার ক্ষেত্রে জোড় করে হলেও আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হবে।

ক. ইতিবাচক চিন্তা

নিজের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখুন। উপন্যাস লেখা একটি লম্বা প্রক্রিয়া এবং এতে অনেক সময় লাগবে। সেইভাবে নিজের চিন্তাভাবনা ও মানসিকতা তৈরি করুন। সফল লেখকদের আত্মজীবনী পড়তে পারেন, তারা কীভাবে শুরু করেছিলেন এবং কীভাবে উন্নতি করেছেন, সেটি আপনার জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।

খ. সমালোচনা গ্রহণ

অন্যদের সমালোচনা গ্রহণ করুন, তবে সেগুলোকে গঠনমূলকভাবে গ্রহণ করুন। এটি আপনাকে ও আপনার লেখাকে উন্নত করতে সহায়তা করবে। পরিবারের সদস্য, বন্ধু, লেখক গোষ্ঠীর সদস্য বা পেশাদার সম্পাদকদের কাছ থেকে আপানার লেখার উপরে ফিডব্যাক নিন।

৮. লেখার জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি

সঠিক পরিবেশ লেখার উপর প্রভাব ফেলে। একটি শান্ত এবং সৃষ্টিশীল পরিবেশ লেখার জন্য অপরিহার্য। একটি ভাল স্থান যেখানে পর্যাপ্ত আলো আসে সেখানে লেখার জন্য একটি স্থান তৈরি করুন। সকাল সকাল লেখা শুরু করতে পারেন এতে করে লেখার জন্য একটি শান্ত পরিবেশ পাবেন, মনোযোগ সহকারে লেখতে পারবেন।

লেখালেখির জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে লেখার জন্য সফটওয়্যার বা অ্যাপ আছে যা ব্যবহার করে সুন্দরভাবে লেখতে পারবেন।

৯. পাঠকদের ফিডব্যাক নেওয়া

পাঠকদের অনুভূতি ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভাবুন। আপনি লেখার মাধ্যমে কিভাবে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন, তারা কি ধরনের কাহিনী চায় সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করুন। পাঠকদের কাছ থেকে আপনার লেখার ফিডব্যাক নিন, বিশেষ করে তারা আপনার লেখার কোন অংশ বেশি উপভোগ করেছে এবং কেন ইত্যাদি। লেখার কি উন্নতি করতে পারেন সেই বিষয়ে প্রশ্ন করুন।

আপনার লেখার জন্য একটি স্টাইল নির্ধারণ করুন। যেমন আপনি কোন শ্রেণির পাঠকদের জন্য লিখছেন, তাদের কি চাহিদা তা জানার চেষ্টা করুন।  আপনি কি YA ফিকশন লিখছেন, নাকি রোম্যান্স বা থ্রিলার? এই বিষয়গুলির মধ্যে কোন ধরনের বইয়ের চাহিদা কেমন সেই সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে, এতে করে লেখার সময় আপনি সেই বিষয়কে টার্গেট করে লিখতে পারবেন।

১০. লেখালেখিকে উপভোগ করা

সব কথার শেষ কথা লেখাকে উপভোগ করুন। আপনি যদি লেখাকে উপভোগ না করতে পারেন, লেখার প্রতি আপানার ভালবাসা না থাকে তাহলে আপনি কখনই ভাল লেখক হতে পারবেন না। লেখা একটি যাত্রা এবং এটিকে উপভোগ করা উচিত। লেখায় মনোযোগ দিন এবং নতুন নতুন ধারণা নিয়ে পরীক্ষা করুন। জোড় করে লিখার চেষ্টা করবেন না। যখন লেখতে ভাল লাগবেনা, চাপ অনুভব করবেন, অবশ্যই বিরতি নিন। এতে করে আপনার মস্তিষ্ক পুনরুজ্জীবিত হবে এবং ভালভাবে চিন্তা করতে পারবেন।

শেষ কথা

উপন্যাস লেখার নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি সফলভাবে উপন্যাস লিখতে পারবেন। থিম, চরিত্র গঠন, প্লট নির্মাণ, লেখার স্টাইল এবং সম্পাদনার মতো বিষয়গুলোকে ভালভাবে মেনে চললে আপনি আপনার লেখাকে উন্নত করতে পারবেন। নিয়মিত লেখার অভ্যাস করুন, মন থেকে লিখুন এতে আপনার লেখার দক্ষতা বাড়াবে। এই আর্টিকেলে উল্লেখ করা উপন্যাস লেখার নিয়ম ও টিপসগুলো যদি আপনার কাজে আসে তাহলেই এই লেখা সার্থক।

উপন্যাস ও গল্পের মাঝে কি পার্থক্য তা জানার জন্য উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

About the Author: Piku

হ্যালো, আমি পিকু। নাম দেখে অনেকেই মনে করতে পারেন এইটা কেমন নাম, এইটা কি আমার আসল নাম নাকি? না এইটা আমার ছদ্মনাম যা আমি নিজেই দিয়েছি। আমি বিডিইবুক সাইটে একজন কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে লেখালিখি করে থাকি। আমি মূলত বাংলা ভাষায় প্রকাশিত বিভিন্ন বই এবং লেখক নিয়ে লিখে থাকি। আমার পড়া বিভিন্ন সেরা বই সম্পর্কে আপনারা এই সাইটে আর্টিকেল পড়তে পারবেন।

You May Also Like

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।