রবিবার, মে 11, 2025
  • Login
বাংলা ভাষা, বই এবং লেখক পরিচিতি
  • সেরা বই
  • শিক্ষামূলক
  • চরিত্র পরিচিতি
  • বাংলাদেশ
  • উক্তি
No Result
View All Result
  • সেরা বই
  • শিক্ষামূলক
  • চরিত্র পরিচিতি
  • বাংলাদেশ
  • উক্তি
No Result
View All Result
বাংলা ভাষা, বই এবং লেখক পরিচিতি
No Result
View All Result

১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন

Taufik by Taufik
মার্চ 22, 2025
in বাংলাদেশ
0
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন

১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে নানা রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। এক কথায় বলা যায়, এই সময়কালটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইতিহাসে এই সকল বিষয় নিয়ে নানা তথ্য রয়েছে। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার নানা দিক তুলে ধরে।

আজকে আমরা এই আর্টিকেলে সেই সময়ের ইতিহাস ও গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনের কথা আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আসা করি আমাদের এই আর্টিকেলটি দ্বারা আপনারা সঠিক বিষয় জানতে পারবেন। আসুন তাহলে তা জানা যাক।

কি হয়েছিল ১৯৪৭ সালে?

কি হয়েছিল ১৯৪৭ সালে?

১৯৪৭ সালের ইতিহাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই সময়ে ভারত উপমহাদেশে বিশাল রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন ঘটে। ১৯৪৭ সালকে স্বাধীনতা এবং দেশভাগের বছর হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৪৭ সাল ভারত উপমহাদেশের মানুষের কাছে একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। কারণ এই সময়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভারত উপমহাদেশ থেকে তাদের শাসন শেষ করে। এবং আমরা সকলেই জানি ব্রিটিশরা প্রায় ২০০ বছর বাংলায় শাসন করে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্রিটিশদের পক্ষে উপমহাদেশে শাসন চালানো অসম্ভব হয়ে পরে।

এবং সেই কারণে তারা ভারতকে স্বাধীনতা দিতে বাধ্য হয়। অনেক অন্যায়, অত্যাচার ও নানা নির্যাতনের পরে ভারত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এবং ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার পরে, ভারতকে দুই অংশে ভাগ করা হয়। একটি ভারত ও আরেকটি পাকিস্তান। এবং পাকিস্তানকে দুটি অংশে বিভক্ত করা হয়। পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান। বলে রাখা ভালো পশ্চিম পাকিস্তান বর্তমান পাকিস্তানের অংশ। এবং পূর্ব পাকিস্তান যেটি বর্তমান বাংলাদেশর অন্তর্ভুক্ত। এই দেশভাগের ফলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক হিংসা এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে। অন্যদিকে দেশভাগের প্রভাবের ফলে লাখ লাখ মানুষ বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়।

এবং তারা এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যায়। এই অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর থেকে অনেক রক্তপাত, সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। এবং সে সময় দেখা যায়, লাখ লাখ হিন্দু-মুসলিম পরিবার তাদের পূর্বপুরুষের ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে একে অপরের দেশে চলে যায়। ভারতীও যুদ্ধের স্বাধীনতার আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন মহাত্মা গান্ধী। মহাত্মা গান্ধী অহিংস প্রতিরোধের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন। যেটির ফলে অনেক প্রাণহানির পরে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

১৫ ই আগস্ট ১৯৪৭ ভারতের স্বাধীনতা দিবস

১৫ ই আগস্ট ১৯৪৭ ভারতের স্বাধীনতা দিবস

স্বাধীনতা দিবস হল ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট (১৩৫৪ বঙ্গাব্দের ২৯ শ্রাবণ, শুক্রবার) ভারত ব্রিটিশ রাজশক্তির শাসনকর্তৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। ভারতে তাদের সেই ঘটনাটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১৫ আগস্ট তারিখটিকে ভারতে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ভারত এক দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পর স্বাধীনতা অর্জন করে। এবং সেসময় স্বাধীনতা আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ শহিদ হয়েছেন। ভারতীও যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দেন মহাত্মা গান্ধী। তার নেতৃত্বে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তোলা হয়। এবং অনেক রক্তের বিনিময়ে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করে। যুদ্ধের সময় হাজার হাজার মানুষ প্রান হারায়।

এবং জানা যায়, প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুহারা হন। পরবর্তীতে স্বাধীনতা অর্জনের পরে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহন করে। এবং শপথ গ্রহণের পর দিল্লির লাল কেল্লার লাহোরি গেটের উপর ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এবং সেই থেকেই প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। অন্যান্য দেশের সাথে সে দিন ভারতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্রভাতফেরি, কুচকাওয়াজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। এবং ১৫ আগস্ট ভারতে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে গণ্য করা হয়।

পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান গঠন

পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান গঠন

ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পরে দুইটি দেশ গঠন করা হয়। বলে রাখা ভালো, দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে অর্থাৎ ধর্মের ভিত্তিতে দুইটি পৃথক রাষ্ট্র গঠন করা হয়েছে ভারত এবং পাকিস্তান। অন্যদিকে পালিস্তানকে আবার দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। পাকিস্তান গঠন হওয়ার পরে মুসলিম লীগের প্রধান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান হন। এবং ১৭ই অগাস্ট পাকিস্তানের করাচিতে গভর্নর জেনারেল হিসেবে শপথ নেন। এবং পূর্ব পাকিস্তানে অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকাতে সেদিন বিভিন্ন সড়কে আতশবাজি পোড়ানো হয়েছিল।

৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গণতান্ত্রিক যুবলীগের পূর্ব পাকিস্তান সাংগঠনিক কমিটি তৈরি হয়। কিন্তু পরে মুসলিম লীগের রাজনীতির বিপরীতে ক্রমে শক্তিশালী হতে থাকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার একটি দল গঠনের আলোচনা, যার প্রেক্ষাপটে প্রথমে ছাত্রলীগ এবং পরে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়।  পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে নতুন প্রতিষ্ঠিত দলের নাম রাখা হয় পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। এবং ১৯৫৫ সালে এই নাম থেকে মুসলিম অংশটি বাদ দেয়া হয়।

তার পর থেকেই শুরু হয় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে দ্বন্দ। নানা ছোট বড় ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক সময় এটি সংগ্রামের রূপধারণ করে। ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের মানুষদের নানা ভাবে নির্যাতন করতো। এবং তাদের কথা অনুযায়ী চলাচল করতে বলতো। পাকিস্তানের দুই অংশের একটি বড় সমস্যা ছিল। সেটি হচ্ছে ভাষা। পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা ছিল ঊর্দু, এবং পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষা ছিল বাংলা। এই ভাষা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্য দ্বন্দ তৈরি হয়। যেটি পরবর্তীতে একটি বড় আন্দলনের রূপধারণ করে।

ভাষা আন্দোলন

ভাষা আন্দোলন

ভাষা আন্দোলনকে সংগঠিত এক ঐতিহাসিক আন্দোলন হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেকিনা ভাষার জন্য সংগ্রাম গড়ে তুলেছে। মূলত ভাষা আন্দোলন ছিল পাকিস্তানে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য। এই আন্দোলনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশন করে। যেটি পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হওয়ার পরে পাকিস্তানকে দুই অংশে ভাগ করা হয়। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান। মূলত পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশের অংশ ছিল। এবং পশ্চিম পাকিস্তানিরা নানা ভাবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণদের নির্যাতন করতো।

এবং একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা দেয়, ‘উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।’ অনুষ্ঠানে জিন্নাহর বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে কার্জন হলে উপস্থিত ছাত্ররা সেটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং না না বলে প্রতিবাদ জানায়। কারণ পূর্ব পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষ বাংলা ভাষী ছিল, এবং তারা মনে করেছিল, বাংলা ভাষাও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃত হওয়া উচিত। পাকিস্তানের শাসক শ্রেণি, যারা পশ্চিম পাকিস্তানে বসবাস করত, তারা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণদের কাছে। এছাড়াও নানা ভাবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণদের তারা নির্যাতিত করতো।

সেইসকল বিষয়কে কেন্দ্র করে ভাষা আন্দোলন গঠিত হয়। এবং এই আন্দোলনে হাজারো মানুষ শহিদ হয়। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী সাধারণ ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়েছিল। এবং সেই ধর্মঘটটি প্রতিহত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা। সমবেত ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে মিছিল নিয়ে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ এবং গুলি বর্ষণ করে; ঘটনাস্থলে আবুল বরকত, রফিকউদ্দিন আহমদ এবং আব্দুল জব্বার- তিনজন মারা যান। হাসপাতালে মারা যান আব্দুস সালাম। এই ঘটনাটি পুরো বিশ্বে ছরিয়ে যায়। এবং বাংলার মাটিতে এই হত্যার বিচারের দাবিতে দামাল ছেলেরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তোলে। এবং এই সংগ্রামটি পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের রূপধারণ করে।

রাজনৈতিক উত্তেজনা

রাজনৈতিক উত্তেজনা

ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে দেশ বিভক্ত হওয়ায় নানা রকমের জটিল সমস্যা দেখা দেয়। তার মধ্য অন্যতম সমস্যা ছিল পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তেজনা। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত, ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশের রাজনৈতিক উত্তেজনা বিশেষভাবে তীব্র ছিল। এবং এই সময়ে নানা রকমের রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। বিশেষ করে ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক অনেকটাই সংকটপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এই উত্তেজনার মূল কারণ ছিল বিভক্তি। আমরা সকলেই জানি, বিভক্তির মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হয়ে দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা নিয়ে পাকিস্তান এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা নিয়ে ভারত গঠিত হয়।

এবং অন্যদিকে দুই দেশের মধ্য কাশ্মীরের সমস্যা নিয়ে নতুন করে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। যা এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের আন্দোলন তথা বাংলাদেশ স্বাধীনতা আন্দোলন সেই সময়ের পরিস্থিতিকে নানা ভাবে পরিবর্তন করে। ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী আমরা জানতে পারি, ২৩ শে জুন, ১৯৪৯ সালে ঢাকার কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে অনুষ্ঠিত এক সভায় গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর প্রস্তাব অনুযায়ী দলের নামকরণ করা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। এবং সেইসাথে পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংগঠনের নাম রাখা হয় ‘নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’, যার সভাপতি ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।

এবং তরুণ নেতা হিসেবে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে সেই দলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এবং তা পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হওয়ায় তারা নানা ভাবে বাঙালিদের ওপর অন্যায় ও অত্যাচার করতে থাকে। দেশ বিভক্তের পরে এইসকল ছোট বড় সকল বিষয় নিয়ে নানা রকমের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এবং একে অপরদের প্রতি অন্যায়, অত্যাচার চলমান থাকে। এবং পরবর্তীতে তা যুদ্ধের রূপ নেয়। পশ্চিম পাকিস্তানের থেকে সঠিক অধিকার আদায়ের জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা সংগ্রাম গড়ে তোলে। এবং অনেক রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন

১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন

১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন। এই আন্দোলনটি ছিল মূলত সঠিক অধিকার আদায়ের জন্য। কেননা পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানিদের নানা ভাবে নির্যাতন করতো। তারা বাঙালিদের সঠিক ভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে দিত না। এবং তাদের কথা অনুযায়ী চলাচল করতে বলতো।

তাই সেই সকল বিষয়ের সঠিক বিচার পেতে বাঙালিরা পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে। তার মধ্য অন্যতম ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন । যেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে পরিচিত। এই আন্দোলনটি মুহাম্মদ তাজউদ্দীনের নেতৃত্বে শুরু করা হয়। এবং আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ছয়টি বিষয়কে তুলে ধরা। ছয় দফা প্রস্তাবের মধ্য উল্লেখযোগ্য ছিলঃ

  • স্বায়ত্তশাসনের দাবি।
  • শুধু পূর্ব পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
  • কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা।
  • বিকেন্দ্রীকৃত প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
  • কেন্দ্রীয় সরকারের একক কর্তৃত্ব বন্ধ ও
  • নির্বাচনী ব্যবস্থা।

পশ্চিম পাকিস্তানদের কাছে ৬ দফা প্রস্তাব ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের একটি পলিটিক্যাল অ্যাকশন প্ল্যান। যেটি মূলত পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের দাবিতে পেশ করা হয়েছিল। এবং এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে ছিল পাকিস্তান সরকারের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য দূর করা। যাতে তারা সঠিক অধিকার আদায় করতে পারে। পূর্ব পাকিস্তানকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার দাবি তুলে ধরা হয়। যাতে পূর্ব পাকিস্তানিরা নিজস্ব আইন, প্রশাসন ও অর্থনীতি পরিচালনা করতে পারে।

এবং অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানে আয়ের বেশিরভাগ অংশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করা হলেও, তা পশ্চিম পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হত। এই ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তানকে তার উপার্জিত অর্থ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার দাবি প্রদান করা হয়। এছাড়াও আরও অনেক দাবির ভিত্তিতে এই আন্দোলনটি পরিচালনা করা হয়। তবে পূর্ব পাকিস্তানিদের এইসকল দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। ফলে তাদের এই প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে আন্দোলনটি আরও ভয়ংকর রূপধারণ করে। যা ইতিহাসের পাতায় এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে।

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান

১৯৬৯ সালের

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল পাকিস্তানের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক আন্দোলন। যেটি পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশ থেকে উত্থিত হয়েছিল। এটি ছিল একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন। যা শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অধিকারের দাবিতে অনুষ্ঠিত হয়। ইতিহাসে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান আন্দোলন পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে এক বিশাল জন আন্দোলন হিসেবে পরিচিত। বলে রাখা ভালো, এই আন্দোলনের আগে ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা আন্দোলন শুরু করেছিলেন, যা পূর্ব পাকিস্তানের জন্য অধিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি করেছিল। এবং এর পর থেকেই পাকিস্তান সরকার এবং পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। গণঅভ্যুত্থানের সূত্রপাত ঘটে ১৯৬৯ সালে। যেটির ফলে পাকিস্তানে ব্যাপক প্রতিবাদ এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়।

পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি বৈষম্য এবং অসন্তুষ্টির কারণে বিভিন্নভাবে দমনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে থাকে। এবং পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আওয়ামী লীগ এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন চলমান রাখে। এই আন্দোলনটি আরও জোরদার করতে ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি মাসে, শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক জনসমাবেশ করেন। এই সমাবেশে তিনি পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন এবং পাকিস্তান সরকারের বিরোধিতা শুরু করেন। গণঅভ্যুত্থান আন্দোলন ছিল পূর্ব পাকিস্তানের এক ঐতিহাসিক প্রতিবাদ আন্দোলন। তারা নিজেদের সঠিক অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। এই গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনটি পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে পরিণত করে। এবং বলা যায়, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে এই গণঅভ্যুত্থান আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামের একটি অগ্রদূত।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৭১ সাল বাঙালি জাতির স্মরণীয় দিনের মধ্য একটি। এই সময়ে হাজারো বাঙালি বিনা অপরাধে প্রাণ দিয়েছেন। ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে সংগ্রাম করে। এবং এই সংগ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের ছোরা গুলিতে হাজারো বাঙালি শহিদ হয়। এই সংগ্রামটি ছিল নিজেদের অধিকার আদায়ের। এই আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে দেশ বিভক্ত হওয়ার পর থেকে। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর, পাকিস্তান গঠিত হয় দুটি অংশে। পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। এই  দুই অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও অর্থনৈতিক অমিল ছিল, এবং পূর্ব পাকিস্তান ছিল বৈষম্যের শিকার।

মূলত এখান থেকেই সংগ্রামের উৎপত্তি ঘটে। পাকিস্তানি সরকার বাঙালিদের নানা ভাবে নির্যাতন করতো। এবং নানা রকমের অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচারের শিকার হতো পূর্ব পাকিস্তানের জনগণেরা। অনেক আন্দোলনের পরে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। এবং পাকিস্তান সরকার তার নির্বাচনী ফলাফল অগ্রাহ্য করে এবং ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করে। এর ফলে, পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে এবং সেখানকার জনগণ স্বাধীনতার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সরকার তখনকার রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রধান আলী বুগতি নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক আক্রমণ শুরু করে।

এবং সেই রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় গুলি চালিয়ে বিপুল সংখ্যক বাঙালি জাতীয়তাবাদী এবং রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা করতে শুরু করে। এবং বহু মানুষকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনার পরে লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে যায়। পরবর্তীতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং বাংলার দামাল ছেলেদের ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে শুরু হয় মুক্তি যুদ্ধ। যেটি প্রায় ৯ মাস চলমান থাকে। এই ৯ মাসে হাজারো মানুষ বিনা অপরাধে প্রাণহানী হয়। পরবর্তীতে বাংলার দামাল ছেলেদের সাহসিকতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের পরাজিত করে আমরা একটি স্বাধীন দেশ অর্জন করি। এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহায়তায়, বাঙালি জনগণের অবিস্মরণীয় ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে।

বাংলাদেশের জাতীয় দিবস এবং তাদের গুরুত্ব সমূহ

শেষ কথা

ইংরেজরা প্রায় ২০০ বছর বাংলা শাসন করেন। ইংরেজদের শাসন অবসান ঘটলে অনেক পরিবর্তনের দেখা যায়। তার মধ্য অন্যতম দেশ বিভক্ত। এই দেশ বিভক্তের পরে শুরু হয় আরেকটি নতুন অধ্যায়। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাস ছিল এক চরম রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংকটের সময়। কেননা এই সময়কালে, পাকিস্তান গঠন, স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, যেটি কিন্তু সহজ ছিল না।

এই লিখাটিতে আমরা ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত প্রায় সকল ঘটনার কথা উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি। সেইসাথে বাংলার দামাল ছেলেদের অদম্য সাহসের কথা আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আসা করছি আমাদের এই লিখাটি আপনাদের সঠিক সময়ে কাজে আসবে। আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন। এবং নিয়মিত এইসকল তথ্য জানতে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ধন্যবাদ।

Tags: ১৯৪৭১৯৭১পশ্চিম পাকিস্তানপূর্ব পাকিস্তানবাংলাদেশের ইতিহাসভাষা আন্দোলনমুক্তিযুদ্ধ
Previous Post

বাংলাদেশের নির্বাচন ও রাজনীতি সংক্ষিপ্ত পটভূমি

Next Post

বাংলাদেশের নিষিদ্ধ কিছু বই এবং নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ

Next Post
বাংলাদেশের নিষিদ্ধ কিছু বই এবং নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ

বাংলাদেশের নিষিদ্ধ কিছু বই এবং নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

পপুলার লেখা

  • উপন্যাস লেখার নিয়ম এবং উপন্যাস লেখার কিছু টিপস

    উপন্যাস লেখার নিয়ম এবং উপন্যাস লেখার কিছু টিপস

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বাংলা সাহিত্যের ১০টি সেরা প্রেমের উপন্যাস

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ছোটদের সেরা গল্পের বইগুলোর তালিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ১০০+ সেরা ইসলামিক বাণী চিরন্তনী ও মনীষীদের কথা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • সেরা ১০০+ কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি ও বাণীসমূহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

বিভাগসমূহ

  • সেরা বই
  • শিক্ষামূলক
  • চরিত্র পরিচিতি
  • বাংলাদেশ
  • উক্তি
  • About US
  • Contact US
  • Privacy Policy

© 2025 BDeBooks - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • About US
  • Contact US
  • Featured News
  • Privacy Policy
  • বাংলা বইয়ের সংগ্রহশালা

© 2025 BDeBooks - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In